এক ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ভিড় হয়ে যায় প্ল্যাটফর্মে। রবিবার, পার্ক সার্কাস স্টেশনে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
ফিশপ্লেটে ফাটল দেখা দেওয়ায় শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হল রবিবার বিকেলে। পার্ক সার্কাস স্টেশনের ডাউন লাইনের ফিশপ্লেটে ফাটল হওয়ায় এ দিন প্রায় এক ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। ঘটনার জেরে চারটি লোকাল ট্রেন দেরিতে চলেছে। বাতিল করতে হয়েছে তিনটি ট্রেন। ফলে ভোগান্তিতে প়ড়তে হয় সাধারণ যাত্রীদের। তবে এ দিন ছুটির দিন হওয়ায় ভোগান্তি অনেকটাই কম ছিল। সপ্তাহের অন্য দিনে এই ঘটনা ঘটলে সমস্যা অনেকটাই বাড়ত বলে জানাচ্ছেন যাত্রীদের একাংশ।
রেল সূত্রের খবর, এ দিন বিকেল সওয়া চারটে নাগাদ পার্ক সার্কাসের এক নম্বর রেল স্টেশনের ডাউন লাইনে ফিশপ্লেটের ফাটলটি নজরে আসে স্থানীয় লোকজনের। তাঁরাই স্টেশন মাস্টারকে খবর দেন। সঙ্গে সঙ্গে ওই লাইনে যাবতীয় ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বালিগঞ্জ থেকে রেলের আধিকারিকদের একটি বিশেষ দল আসে ঘটনাস্থলে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে ধরা পড়ে, সূক্ষ্ম একটি ফাটল তৈরি হয়েছে ওই ফিশপ্লেটটিতে। ট্রেন চলাচলের সময় সেই ফাটলটিই ক্রমশ বড় হচ্ছে। রেলের আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এমনিতে তাপমাত্রার তারতম্য হলে ফিশপ্লেটে ও রকম ফাটল প্রায়শই তৈরি হয়। প্রয়োজন মতো সেগুলি সারিয়ে দেওয়া হয়। রেলের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘তাপমাত্রার ওঠানামার ফলে ফিশপ্লেটে অনেক সময়েই ফাটল তৈরি হয়। এ ক্ষেত্রেও তেমনই হয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।’’ মেরামতিতে প্রায় আধ ঘণ্টা সময় লাগে বলে সূত্রের খবর।
কিন্তু তত ক্ষণে স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় জমে যায়। ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলে সাধারণত তার প্রভাব আপ লাইনেও পড়ে। ফলে দুই লাইনেই সাময়িক ভাবে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয় বলে রেল সূত্রের খবর। ডাউন লাইনে প্রায় এক ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। এক যাত্রীর কথায়, ‘‘এক ঘণ্টা ট্রেন চলেনি। ফলে পরের ট্রেনগুলোতেও ভিড় ছিল।’’ আর এক যাত্রী বলেন, ‘‘ছুটির দিন বলে তবু অতটা ভুগতে হল না। অন্য দিন হলে সমস্যা আরও বাড়ত।’’ তবে রেলের নজরদারির অভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, নজরদারির কথা যতই রেলের তরফে প্রচার করা হোক না কেন, সেই কাজে যথেষ্ট ঢিলেমি রয়েছে। না হলে এ রকম ঘটনা তো অনেক সময়েই ঘটে। কিন্তু তার পরেও রেলের তরফে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না কেন! এক যাত্রীর কথায়, ‘‘নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে তো শুনতে পাই। কিন্তু তা হলে আর এ রকম ঘটনা কেন ঘটে? তার ফল তো আমাদেরই ভুগতে হয়!’’
রেলের আধিকারিকদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, ফিশপ্লেট মেরামতি একটা রুটিন কাজ। গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রার যে রকম হেরফের হচ্ছে, তাতেই এ দিনের ফাটল তৈরি হতে পারে। পূর্ব রেলের মুখপাত্র রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘এ দিন সওয়া ৪টে নাগাদ ফিশপ্লেটে ফাটলের ঘটনা নজরে আসে। তা ৫টা নাগাদ সারিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে চারটে লোকাল ট্রেন দেরিতে ছেড়েছে। বাতিল করতে হয়েছে তিনটি ট্রেন।’’