বন্ধু সেজে ট্রেনে চেপে ব্যাগ চুরির চক্র সক্রিয়

তদন্তকারীরা জানান, ১৮ এপ্রিল বৃদ্ধ প্রীতেশকুমার জানা স্ত্রীকে নিয়ে বসিরহাট স্টেশনে যান ট্রেন ধরার জন্য। নিউ আলিপুরে ছেলের বাড়ি যাচ্ছিলেন তাঁরা।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ০২:০৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

‘বন্ধু’র সাহায্যে ট্রেনে উঠেছিলেন বৃদ্ধ দম্পতি। তিনিই ট্রেনের সিটের নীচে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন তাঁদের ট্রলি ব্যাগ। কিন্তু ট্রেন থেকে নামার আগে তাঁরা দেখতে পেলেন ‘বন্ধু’ উধাও, নেই ট্রলি ব্যাগও!

Advertisement

রেল পুলিশ জানিয়েছে, চলন্ত ট্রেন থেকে ব্যাগ উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ধরা পড়েছে দুই দুষ্কৃতী। তবে তারা ওই দম্পতির ব্যাগ চুরির ঘটনায় সরাসরি যুক্ত না হলেও, তাদের জেরা করে জানা গিয়েছে, বন্ধু সেজে যাত্রীদের ব্যাগ চুরির একটি চক্র সম্প্রতি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ধৃতদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া পাঁচটি ব্যাগও উদ্ধার হয়েছে। খোঁজ শুরু হয়েছে চক্রের বাকি সদস্যদের। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, চক্রটি মূলত দমদম-হাবরা, দমদম-বসিরহাট লাইনের ট্রেনে দুষ্কর্ম চালাত। সাধারণত দুপুরের ফাঁকা সময়ে ট্রেন ধরতে আসা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের টার্গেট করত তারা। যাতে বন্ধু সেজে সাহায্যের নাম করে বিশ্বাস অর্জন করে সুবিধামতো জায়গায় যাত্রীর ব্যাগ রেখে দেওয়া যায়। রেল পুলিশ জানিয়েছে, অরবিন্দ পাকড়াশি ওরফে পচা এবং দেবপ্রসাদ রায় ওরফে বাবলুকে গ্রেফতার করে হয় গত সপ্তাহে। নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা ওই দুই দুষ্কৃতীকে আদালতে পেশ করা হলে তাদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে।

তদন্তকারীরা জানান, ১৮ এপ্রিল বৃদ্ধ প্রীতেশকুমার জানা স্ত্রীকে নিয়ে বসিরহাট স্টেশনে যান ট্রেন ধরার জন্য। নিউ আলিপুরে ছেলের বাড়ি যাচ্ছিলেন তাঁরা। বৃদ্ধ জানান, দুপুরবেলায় প্ল্যাটফর্মে এবং ট্রেনে ভিড় বেশ কমই ছিল ওই দিন। সে সময় এক যুবক এসে বৃদ্ধ দম্পতির সঙ্গে ভাব জমায়। এবং সাহায্যকারী বন্ধু সেজে তাঁদের ট্রলি ব্যাগটি ট্রেনের ভিতরে তুলে দেয়। বৃদ্ধের দাবি, ট্রলি ব্যাগটি ট্রেনের সিটের নিচে রেখে উল্টো দিকের সিটে বসে ওই যুবক। তার পাশেই স্ত্রীকে নিয়ে বসেন বৃদ্ধ। বসিরহাট ছাড়ার পর থেকেই যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে ট্রেনের ভিতরে। প্রীতেশবাবু পুলিশকে জানান, ওই যুবক বিরাটি স্টেশনে নেমে যাওয়ার পরে হঠাৎ তাঁরা খেয়াল করেন, উল্টো দিকের সিটের নিচে রাখা ট্রলি ব্যাগটিও নেই। এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা।

Advertisement

রেল পুলিশ জানিয়েছে, বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই শিয়ালদহের রেল পুলিশ সুপার অশেষ বিশ্বাসের নির্দেশে বিশেষ তদন্তকারী দল তৈরি করা হয়। এলাকার দুষ্কৃতীদের কাছ থেকে পুলিশ প্রথমে ওই চক্রের কথা জানতে পারে। তদন্তকারীরা প্রথমে পচা এবং পরে বাবলুকে গ্রেফতার করেন।

তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতেরা শিয়ালদহ শাখায় ওই চক্র চালানোর কথা স্বীকার করে নিয়েছে। তবে প্রীতেশবাবুর ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত নয় বলে দাবি করেছে। তারা গত কয়েক মাস ধরেই ওই চক্র চালাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। চক্রের বাকি সদস্যদের খোঁজ চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement