রাস্তা বেশি নয়। কিন্তু যান়়জটের জেরে সেই রাস্তা পেরোতেই লেগে যাচ্ছে বহু সময়। বছরের পর বছর ধরে এমনই অবস্থা শিয়ালদহ স্টেশন সংলগ্ন রাস্তার। এ বার সেই জট ছাড়াতে শিয়ালদহ উড়ালপুল বা বিদ্যাপতি সেতুতে নতুন একটি র্যাম্প তৈরির প্রস্তাব দিল কলকাতা পুলিশ। যার ভিত্তিতে সরকারি সংস্থা ‘রাইটস’ সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে বলেও লালবাজার সূত্রের খবর।
পুলিশ সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারকে দেওয়া ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, শিয়ালদহ স্টেশনের কাছে যেখানে মহাত্মা গাঁধী রোড মিশেছে উড়ালপুলে, সেখান থেকে এন্টালির গুড়িপাড়া পর্যন্ত একটি একমুখী র্যাম্প তৈরি করতে বলা হয়েছে। দু’কিলোমিটার দীর্ঘ ওই র্যাম্পের তিনটি শাখা এন্টালি ও পার্ক সার্কাসের তিন জায়গায় নামবে। ওই র্যাম্প তৈরি হলে মহাত্মা গাঁধী রোড এবং এপিসি রোড দিয়ে আসা গাড়ি বিনা বাধায় পার্ক সার্কাস, বেলেঘাটা কিংবা ইএম বাইপাসের দিকে চলে যেতে পারবে। এর ফলে শিয়ালদহ এবং মৌলালির যানজট কমবে বলে পুলিশের দাবি।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরের বাইরে পুরো এলাকা জুড়েই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ চলছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার রেল লাইনের ধার দিয়ে প্রস্তাবিত র্যাম্পের স্তম্ভ বসানো হবে। এ ব্যাপারে রেলের সঙ্গেও কথা বলা প্রয়োজন। পুলিশ সূত্রের খবর, মেট্রো রেলের কাজ শেষ হলেই ওই র্যাম্পের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া শিয়ালদহ স্টেশনের নীচের অংশে নিকাশি নালা রয়েছে। সেগুলির যাতে ক্ষতি না হয়, দেখা হবে সেই বিষয়টিও।
কী ভাবে যানজট কমবে? পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, বর্তমানে মহাত্মা গাঁধী রোড বা এপিসি রোড দিয়ে আসা গাড়ি বেলেঘাটা বা ইএম বাইপাসের দিকে যেতে চাইলে বেলেঘাটা মেন রোড দিয়ে যেতে হয়। এতে শিয়ালদহ সংলগ্ন এলাকার উপরে চাপ বাড়ে। সেই চাপ কাটাতেই নতুন র্যাম্পটিকে বিআর সিংহ হাসপাতালের পিছন দিয়ে দক্ষিণ শাখার রেললাইন বরাবর নিয়ে যাওয়া হবে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, শিয়ালদহ রেল ব্রিজ পার করে র্যাম্পের একটি শাখাকে মিশিয়ে দেওয়া হবে বেলেঘাটা মেন রোডের সঙ্গে। অন্য দু’টি শাখার একটি নামবে ক্যানাল সাউথ রোডে, অন্যটি এন্টালির গুড়িপাড়ার কাছে।
ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের নির্দেশে শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরের পুরো দায়িত্ব পেয়েছে কলকাতা পুলিশ। বৃহস্পতিবার থেকে সেই দায়িত্ব হাতে নিয়েছে লালবাজার। তারা জানিয়েছে, শিয়ালদহের যান-শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য অটো এবং ট্যাক্সির পৃথক লাইন করা ছাড়াও পথচারীদের জন্য পৃথক পথ করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, ‘‘শিয়ালদহ চত্বরে নতুন যানশাসন ব্যবস্থাকে আরও মসৃণ করতেই উড়ালপুলের ওই র্যাম্পের প্রয়োজন রয়েছে।’’