রওনা হওয়া বিমানকে ডেকে এনে বুধবার সন্ধ্যায় নামিয়ে আনা হয়েছিল সঞ্জয় অগ্রবাল নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে। সেই নাটকীয় মুহূর্তের সাক্ষী ছিলেন কলকাতা বিমানবন্দরের বহু অফিসার। কিন্তু, নাটক তখনও বাকি ছিল।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স-এর (ডিআরআই) হাতে আটক ৪৬ বছরের সঞ্জয় ছাড়াও ওই সন্ধ্যায় কলকাতা বিমানবন্দরে ছিলেন তাঁর বছর কুড়ির ছেলে প্রীতও। প্রথমে সঞ্জয়কে নিয়ে হায়দরাবাদ রওনা হয়ে যাওয়া বিমানকে ফিরিয়ে আনা হয় পার্কিং বে-তে। পরে প্রীতকেও নামিয়ে আনা হয় দুবাইগামী উড়ান থেকে।
গোয়েন্দারা জানতে পারেন, বিদেশে সোনার গয়না রফতানি করার কথা সঞ্জয়ের। তাই তিনি যখন ভারত থেকে সোনা কেনেন, তখন তাঁকে আমদানি শুল্ক দিতে হয় না। অভিযোগ, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বেআইনি ভাবে দেশের ভিতরেই গয়না সরবরাহ করছিলেন সঞ্জয়। বুধবার কলকাতা বিমানবন্দরের পণ্য বিভাগ দিয়ে সঞ্জয় ৫৬ কিলোগ্রাম সোনা হায়দরাবাদ পাঠাচ্ছিলেন বলে খবর আসে। যার বাজারদর ১৬ কোটি টাকারও বেশি। জানা যায়, সেই পণ্য পাঠানোর রসিদে ছিল সঞ্জয়ের নাম। তখনই সঞ্জয়ের খোঁজ শুরু হয়।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল সঞ্জয়ের। বাবা ও ছেলে একসঙ্গে কলকাতা বিমানবন্দরে ঢোকেন। প্রীতের নামে দুবাইয়ের টিকিট, আর প্রীত ও সঞ্জয় — দু’জনের নামে হায়দরাবাদের টিকিট ছিল। প্রীত প্রথমে দুবাই যাওয়ার বোর্ডিং পাস নিয়ে নেন। তার পরে চলে আসেন অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে। সেখানে কাউন্টারে গিয়ে জানান, সঞ্জয় যাবেন না। তিনি যাবেন। ইন্ডিগো প্রীতের নামে বোর্ডিং পাস দিয়ে দেয়। কলকাতা-হায়দরাবাদ রুটের সেই বোর্ডিং পাস বাবাকে দিয়ে প্রীত দুবাইগামী বিমানে গিয়ে বসেন। আর ছেলের বোর্ডিং কার্ড নিয়ে সঞ্জয় বসেন হায়দরাবাদগামী উড়ানে।
কলকাতা বিমানবন্দরের এক অফিসারের কথায়, এই কারণে প্রথমে সঞ্জয়কে খুঁজে বার করা যায়নি। কারণ, সঞ্জয় নিজের নামে বোর্ডিং পাস নেননি। যাত্রী তালিকায় তাই তাঁর নাম দেখাচ্ছিল না। বিমানটি হায়দরাবাদ রওনা হয়ে গেলে সঞ্জয়কে খুঁজে বার করা মুশকিল হত। কারণ, এখান থেকে হায়দরাবাদে বার্তা পাঠালেও যাত্রী তালিকায় সঞ্জয়ের নাম থাকত না। কিন্তু, সঞ্জয়ের ছবি ছিল ডিআরআই-এর কাছে। ফলে, তাঁরা বিমান থেকে নামিয়ে আনেন সঞ্জয়কে।