হাল: অর্ধেক ভর্তি সুইমিং পুল। (উপরে) কলেজ স্কোয়ার এবং (নীচে) হেদুয়ায়। নিজস্ব চিত্র
সাঁতার প্রশিক্ষণের মরসুম আসন্ন। অথচ এখনও তৈরি হল না শহরের দুই প্রধান সুইমিং পুল হেদুয়া এবং কলেজ স্কোয়ার।
প্রতি বছর পয়লা বৈশাখ থেকেই দুই সুইমিং পুলে শুরু হয়ে যায় সাঁতার প্রশিক্ষণ। এই সময়ে দুই পুলের জল থাকে কানায় কানায়। এ বছর কিন্তু সেই চেনা ছবিটা উধাও। দেখা গেল, হেদুয়া এবং কলেজ স্কোয়ারে এখনও জল অর্ধেকও ভরেনি। দু’টি পুলেরই ক্লাব কর্তৃপক্ষেরা তাই জানাচ্ছেন, এ বার পয়লা বৈশাখে প্রশিক্ষণ শুরু করতে পারছেন না তাঁরা। পুল দু’টিতে কিছু সংস্কারের জন্যই এই দেরি বলে দাবি তাঁদের।
হেদুয়ায় গিয়ে দেখা গেল, ১২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের পুলে জল কিছুটা ভরেছে। চারধারে পড়ে আবর্জনা। যেখানে শিক্ষানবীশদের প্রশিক্ষণ হয়, সেই সিমেন্ট ঘেরা পুলগুলি খটখটে। হেদুয়ায় রয়েছে তিনটি সুইমিং ক্লাব। তারই একটির সাধারণ সম্পাদক সনৎ ঘোষ বলেন, ‘‘পাইপের মাধ্যমে আসা গঙ্গার জল পুলে ভরা শুরু হয়েছে। এপ্রিলের শেষে প্রশিক্ষণ শুরু করে দিতে পারব।’’ কেন এই দেরি? সনৎবাবু জানালেন, তাঁদের একটি ডাইভিং বোর্ডের জন্য দেরি। সেটি পরীক্ষা করে দেখা যায়, সামান্য হাতুড়ির ঠোকা মারতেই বোর্ডের সিমেন্টের চাঙড় ভেঙে পড়ে। তাই সেটি সারানো হচ্ছে।
হেদুয়ার তিনটি সাঁতার ক্লাবে প্রায় হাজার চারেক ছেলেমেয়ে সাঁতার শেখেন। ক্লাবের তরফে যতই সাঁতারুদের নিরাপত্তার কথা বলা হোক, হেদুয়া ঘুরে নিরাপত্তার বড় ফাঁক নজরে পড়েছে অভিভাবকদের। যেমন, শিক্ষানবীশেরা যেখানে সাঁতার শেখেন, সেই জায়গা মূল পুল থেকে আলাদা করার জন্য পাঁচিল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। কিন্তু কয়েকটি জায়গায় পাঁচিলের পরিবর্তে রয়েছে লোহার রড। তাঁদের আশঙ্কা, রডের ফাঁক গলে মূল পুলের গভীর জলে শিক্ষানবীশ চলে গেলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এর আগেও দুর্ঘটনা ঘটেছে হেদুয়ায়। তবু কেন এই ফাঁক, প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকেরা।
একই ছবি কলেজ স্কোয়ার সুইমিং পুলে। এখনও ওই পুলে জল অর্ধেকও ভরেনি। গত বছর এখানেই একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সাঁতার কাটতে গিয়ে ডুবে মারা যান সাঁতারু কাজল দত্ত। এমন দক্ষ সাঁতারু কী ভাবে ডুবে মারা গেলেন? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে ওই পুলের পরিকাঠামোগত বেশ কিছু খামতি নজরে পড়েছিল। এই সুইমিং পুলে রয়েছে ছ’টি ক্লাব। একটি ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গৌতম মল্লিক বলেন, ‘‘পুলের বেশ কয়েকটি জায়গায় এমন কিছু কাঠামো ছিল যেগুলো থাকলে আরও দুর্ঘটনা ঘটত। সেগুলো ভাঙা হয়েছে। এ জন্যই পুলে জল ভর্তির কাজ দেরিতে শুরু হচ্ছে।’’ গৌতমবাবুর দাবি, এপ্রিলের শেষে প্রশিক্ষণ শুরু হবে।
যদিও পুলে জলের পরিমাণ দেখে অভিভাবকদের প্রশ্ন, এপ্রিলের শেষে শুরু হবে প্রশিক্ষণ?