অনিয়ম: রাস্তার কাজে লাগানো হচ্ছে বাড়িতে ব্যবহারের গ্যাস সিলিন্ডার। শুক্রবার, নীলগঞ্জ রোডে। নিজস্ব চিত্র
বেআইনি ভাবে গৃহস্থালির গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে রাস্তা সারাইয়ের কাজ করায় ঠিকাদার সংস্থাকে সতর্ক করল কামারহাটি পুরসভা। গত শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই প্রকাশ্যে আসে যে, কামারহাটি পুরসভার নীলগঞ্জ রোড সংস্কারের কাজে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, ওই দিনই রাত ১১টা নাগাদ অভিযোগ খতিয়ে দেখতে নীলগঞ্জ রোডের পঞ্চাননতলা এলাকায় হানা দেন কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা। গিয়ে দেখেন, লাল রঙের গৃহস্থালির গ্যাস সিলিন্ডার (ডোমেস্টিক সিলিন্ডার) ব্যবহার করে পিচ গলিয়ে পাথর বসাচ্ছেন শ্রমিকেরা। সঙ্গে সঙ্গে তিনি শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করতে বলে রাতেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে ডেকে পাঠান।
রবিবার সকালে গোপাল বলেন, ‘‘ঠিকাদারের থেকে জানতে চেয়েছি, কেন তিনি গৃহস্থালির গ্যাস ব্যবহার করছেন। ওঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কাজ করতে হলে নিয়ম মেনে বাণিজ্যিক গ্যাস ব্যবহার করতে হবে।’’ তিনি আরও জানান, ঠিকাদারকে সতর্ক করা হয়েছে, এমন ঘটনা ফের ঘটলে তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।
পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘খুব কম গ্যাস ব্যবহার করার যুক্তি খাড়া করে ওই দিন কাজ করার অনুমতি চেয়েছিলেন ঠিকাদার। পুর কর্তৃপক্ষ তাতে অনুমতি দেননি।’’
বাণিজ্যিক গ্যাস ব্যবহার না করে গৃহস্থালির গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করার পিছনে কম টাকায় বেশি সুবিধা পাওয়ার চিন্তাভাবনা কাজ করে বলে দাবি রাজ্যের পেট্রোলিয়াম ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তুষার সেনের। তিনি বলেন, ‘‘বাণিজ্যিক গ্যাসের থেকে রান্নার গ্যাস ভারী। তাতে বেশি কাজ হয়। তাই বেশি দামে হলেও ঘুর পথে ওই সিলিন্ডার কিনছেন ঠিকাদার, অটোচালকেরা।’’প্রায় মাস দেড়েক ধরে বিটি রোডের সমান্তরাল গুরুত্বর্পূণ রাস্তা নীলগঞ্জ রোডের প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশের সংস্কার শুরু করেছে পুরসভা। সেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট। তাই গ্যাসের সাহায্যে পিচ গলিয়ে সেখানে স্টোন চিপ্স বসানো হচ্ছে। এ জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। রাস্তা সংস্কার হলে বিটি রোডের উপরে চাপ কমবে বলেই মনে করছেন পুর কর্তারা। গোপাল বলেন, ‘‘গৃহস্থালির গ্যাস সিলিন্ডারের জেরে দুধে চোনা পড়ার মতো অবস্থা হয়েছিল।’’