ব্যাটে-বলে: চিড়িয়াখানার সামনে বসছে ফুটব্রিজ। রাস্তা বন্ধ থাকার সুযোগে দিনের ব্যস্ত সময়েই চলছে খেলা। সোমবার, আলিপুরে। ছবি: আর্যভট্ট খান
সপরিবার চিড়িয়াখানা যাওয়ার জন্য সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ব্যারাকপুরের বাসিন্দা অমিত রায়। কিন্তু তাঁরা জানতেন না ফুটব্রিজ নির্মাণের জন্য চিড়িয়াখানার সামনের রাস্তা বেলভেডিয়ার রোড বন্ধ রয়েছে। বন্ধ চিড়িয়াখানার এক নম্বর গেটও। শেষ পর্যন্ত খিদিরপুর, একবালপুর ঘুরে দু’নম্বর গেটে যখন তাঁরা পৌঁছলেন ততক্ষণে সকাল গড়িয়ে প্রায় দুপুর।
একই ভাবে সোমবার এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছতে গিয়ে প্রায় একই রকম ভোগান্তির শিকার হতে হয় শোভাবাজারের আসিফ ইকবালকে। বেলভেডিয়ার রোড বন্ধ থাকায় ডিএল খান রোড যে একমুখী হয়ে গিয়েছে তা জানতেন না তিনি।
সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে বেলভেডিয়ার রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ থাকায় চিড়িয়াখানা সংলগ্ন প্রায় সব রাস্তায় এ ভাবেই জট পাকাল। ভ্যাপসা গরমে যানজটে আটকে নাজেহাল সাধারণ মানুষের অভিযোগ, কোন রাস্তা দিয়ে কী ভাবে যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে সেটা আরও ভাল ভাবে আগেভাগে জানানো উচিত ছিল। ওই এলাকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে ঘুরপথে কী ভাবে যেতে হবে তার কোনও নির্দেশ রাস্তায় না থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে। সোমবার ওই পথে শুধু চিড়িয়াখানার উল্টো দিকের একটি পাঁচতারা হোটেলের অতিথি ও কর্মীদের গাড়ি এবং চিড়িয়াখানার আধিকারিকদের গাড়ি যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল পুলিশ।
পুলিশ ও নির্মাণকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত দু’টো পর্যন্ত ফুটব্রিজের কাজ চলার পরে সোমবার সকাল থেকে ফের কাজ শুরু হয়। তবে সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, কাজ তখনও অনেক বাকি। ফুটব্রিজের মাথার উপরে যে রেলিং থাকে সেটি লাগানো হয়নি। বসেনি ফুটব্রিজের সিঁড়িও। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ফুটব্রিজটি কতটা শক্তপোক্ত হল তা পরীক্ষা করা হবে। তার পরেই ওই ফুটব্রিজের নীচে দিয়ে যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বেলভেডিয়ার রোড খুলে দেওয়ার কথা। কিন্তু এখনও যে পরিমাণ কাজ বাকি তাতে কী মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে সব কাজ শেষ করে গাড়ি চলার অনুমতি দিতে পারবে পুলিশ? ডিসি (ট্র্যাফিক) সুমিত কুমার অবশ্য বলেন, ‘‘যে গতিতে কাজ এগোচ্ছে তাতে সম্ভবত মঙ্গলবার সকালের মধ্যেই পুরো কাজ শেষ হয়ে যাবে। ফুটব্রিজটিকে পরীক্ষা করে মঙ্গলবার সকাল দশটা-এগারোটা থেকেই এই রাস্তায় গাড়ি চলার অনুমতি দেওয়া যাবে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফুটব্রিজে চলমান সিঁড়ি ও সাধারণ সিঁড়ি উভয়ই থাকবে। ডিসেম্বর, জানুয়ারি মাসে চিড়িয়াখানায় বিপুল জনসমাগম হয়। দর্শনার্থীদের অনেকেই বাস বা গাড়ি থেকে নেমে এই বেলভেডিয়ার রোড পেরিয়ে চিড়িয়াখানার ঢোকেন। তখন রাস্তায় মারাত্মক যানজট হয়ে যায়। এই ফুটব্রিজ চালু হলে দর্শনার্থীদের আর রাস্তা পেরোতে হবে না। ফুটব্রিজ পেরিয়ে রাস্তার অন্য পারে চলে যেতে পারবেন তাঁরা। ফলে যানজট অনেকটাই কমে যাবে বলে ট্র্যাফিক পুলিশের দাবি। যদিও দেখা গিয়েছে, শহরের বেশির ভাগ ফুটব্রিজই ফাঁকা পড়ে থাকে। ফুটব্রিজের সিঁড়ি দিয়ে অনেকটা উঠতে হয় বলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ফুটব্রিজ ব্যবহারের প্রবণতা কম। সুমিত কুমারের দাবি, এই ফুটব্রিজে চলমান সিঁড়ি থাকায় মানুষের ব্যবহার করতে অসুবিধা হবে না।