ঘরে ঢুকে মারধর, অভিযুক্ত সেনা

খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। তারাই জখমদের বি এন বসু হাসপাতালে নিয়ে যায়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। রাজীব সেখানে ভর্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩০
Share:

রক্তাক্ত: হাসপাতালে রাজীব দত্ত। নিজস্ব চিত্র

দোকানের সামনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা নিয়ে বচসা। তার জেরেই তুলকালাম বাধল ব্যারাকপুরের নোনাচন্দনপুকুর বাজারে।

Advertisement

অভিযোগ, এক দল সেনা জওয়ান এসে তিনটি দোকান ভাঙচুর এবং দোকান মালিকদের মারধর করেন। রাতেই টিটাগড় থানায় ওই সেনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। বুধবার সেনার তরফ থেকেও পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (‌জোন ১) কে কান্নন বলেন, ‘‘অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ গুরুত্ব দিয়েই ঘটনার তদন্ত করছে। যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।’’

Advertisement

সেনাবাহিনীর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক উইং কমান্ডার সিমরনপাল সিংহ বিরদি বলেন, ‘‘এক সেনা অফিসার এবং তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কয়েক জনের বচসা হয়। কয়েক জন ওই মহিলাকে ধাক্কাধাক্কি করেন। খবর পেয়ে কিছু জওয়ান গিয়ে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন। পরে পুলিশের সহযোগিতায় বিষয়টি মিটে যায়।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, নোনাচন্দনপুকুর বাজারে তিন ভাইয়ের তিনটি দোকান রয়েছে। একটি দোকানের মালিক চিরঞ্জিত দত্ত জানান, সন্ধ্যায় দোকান খুলতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, দোকান আড়াল করে দাঁড় করানো রয়েছে একটি গাড়ি। তিনি বলেন, ‘‘কিছু ক্ষণ পরে এক মহিলা গাড়িটি নিতে এলে তাঁকে এ নিয়ে নিয়ে বলা হলে তিনি রেগে সাইনবোর্ড ছুড়ে ফেলে দেন। প্রতিবাদ জানাতেই তিনি পাল্টা শাসাতে শুরু করেন। তখন অনেকে ওই মহিলার বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করলে তিনি ক্ষমা চেয়ে গাড়ি নিয়ে চলে যান।’’

চিরঞ্জিত জানান, রাত ন’টার পরে দু’টি গাড়িতে করে দোকানে চড়াও হন এক দল জওয়ান। চিরঞ্জিতের অভিযোগ, জওয়ানেরা এসেই গালাগালি এবং ভাঙচুর শুরু করেন। চিরঞ্জিতের ভাই রাজীব দত্ত প্রতিবাদ জানালে তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। প্রাণ বাঁচাতে তিনি বাড়িতে ঢুকে পড়লে কয়েক জন জওয়ান বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়েন। মহিলারা তাঁদের বাধা দিতে গেলে অস্ত্র উঁচিয়ে তাঁদের খুনের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, রাজীবকে ঘর থেকে টেনে বার করে বাঁশ দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। এর পরেই সেনারা চিরঞ্জিতকেও মারধর শুরু করলে ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন দাদা সঞ্জীব দত্ত।

অভিযোগ, জওয়ানেরা তাঁকে খুনের হুমকি দিয়ে রাস্তায় কান ধরে ওঠবোস করতে বাধ্য করেন। তখন স্থানীয়েরা প্রতিবাদ করলে সেনারা তাঁদেরও হুমকি দেন। প্রায় আধ ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়ে চলে যান ওই সেনা জওয়ানেরা।

খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। তারাই জখমদের বি এন বসু হাসপাতালে নিয়ে যায়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। রাজীব সেখানে ভর্তি।

পুলিশ সূত্রে খবর, রাতে কয়েক জন সেনা থানায় গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বললেও অভিযোগ দায়ের করেননি। সঞ্জীব রাতেই অভিযোগ দায়ের করেন। বুধবার অবশ্য সেনার তরফে থানায় অভিযোগ করা হয়, গাড়ির চালক ওই মহিলাকে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement