ফাইল চিত্র
অতিমারি পরিস্থিতিতে শহরবাসীর দোরগোড়ায় পৌঁছতে অনলাইন ব্যবস্থার উপরে বেশি জোর দিতে চায় কলকাতা পুরসভা। তাই পুর পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্যার কথা শুনতে গত সপ্তাহ থেকে সপ্তাহে দু’দিন করে শহরবাসীদের সঙ্গে অনলাইন বৈঠক করছেন পুর কমিশনার বিনোদ কুমার এবং বিশেষ কমিশনার সোমনাথ দে। এই বৈঠকে নাগরিকদের অনেকেই উপকৃত হয়েছেন বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
পুরসভা সূত্রের খবর, প্রতি বুধবার ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত পুর কমিশনারের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে কথা বলতে পারবেন নাগরিকেরা। যে কোনও পুর পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা যাবে। আর বিশেষ কমিশনারের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে লাইসেন্স, কর রাজস্ব, পার্কিং, বিনোদন কর ইত্যাদি সমস্যার বিষয়ে কথা বলা যাবে প্রতি মঙ্গলবার এবং বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত। প্রথম সপ্তাহেই পুরসভার দুই শীর্ষকর্তার সঙ্গে অনলাইন বৈঠকে কথা বলে উপকৃত হয়েছেন প্রায় ৫০ জন নাগরিক।
এ প্রসঙ্গে পুর কমিশনার বলেন, ‘‘রোজ প্রচুর মানুষ তাঁদের নানাবিধ সমস্যা নিয়ে পুরসভায় এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু করোনার জন্য তাঁরা এখন আসতে পারছেন না। তাঁদের কাছে পৌঁছতেই আমাদের এই উদ্যোগ। আগামী দিনে এই অনলাইন পরিষেবার উপরে আরও বেশি জোর দেওয়া হবে।’’
গত সপ্তাহে ওই বৈঠকে পুর কমিশনারকে এক নাগরিক জানান, তাঁর বাড়ির সামনে দিনের পর দিন জঞ্জাল পড়ে থাকে। সেই অভিযোগ শোনা মাত্রই কমিশনার ওই বাড়িতে জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের কর্মীদের পাঠান। জঞ্জাল সরানোর পরে ওই ব্যক্তি টুইট করে পুরসভার প্রশংসা করেন। এ ছাড়া কেউ অনলাইন বৈঠকে প্রতিষেধক কবে পাওয়া যাবে, তা জানতে চান। কেউ আবার নিকাশি, পার্কিং সংক্রান্ত সমস্যার কথাও জানান। একই ভাবে বিশেষ কমিশনারের সঙ্গে অনলাইন বৈঠকে এক ব্যবসায়ী লাইসেন্সের বার্ষিক ডিমান্ড কত টাকা হবে, জানতে চান। তৎক্ষণাৎ হোয়াটসঅ্যাপ করে তাঁকে সেই তথ্য জানানো হয়। পুরসভা সূত্রের খবর, কর রাজস্ব, লাইসেন্স সংক্রান্ত নানাবিধ সমস্যা নিয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হওয়ায় এক দিকে যেমন সংশ্লিষ্ট নাগরিক উপকৃত হচ্ছেন, তেমনই পুরসভার খাতে টাকাও জমা পড়ছে।
পুর কর্তৃপক্ষও মনে করছেন, শীর্ষ কর্তারা এই ভাবে নাগরিকদের সঙ্গে কথা বললে পুরসভার কাজেও স্বচ্ছতা আসবে। নিচু স্তরের কোনও কর্মী কাজে ফাঁকি দিলেও তা ধরা যাবে। নাগরিকদের কাছে পৌঁছতে ২০১৯ সালে ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠান চালু করেছিলেন তৎকালীন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, যা এখন ‘টক টু কেএমসি’ বলে পরিচিত। প্রতি শনিবার পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদও ফোনে নাগরিকদের সমস্যার কথা শোনেন। সেই সময় উপস্থিত থাকেন প্রতিটি দফতরের কর্তারা। ফলে কেউ সমস্যার কথা জানালে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিক তা লিপিবদ্ধ করে রাখেন এবং পরের দিনই ওই নাগরিকের বাড়ি পৌঁছে যান। এই পরিষেবায় বিপুল মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। তাই কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আরও বেশি করে নাগরিকদের কাছে পৌঁছতেই এই ভার্চুয়াল বৈঠকের আয়োজন করছে পুরসভা।