কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
দীর্ঘদিন ধরে মোটা টাকার বকেয়া সম্পত্তিকর পরিশোধের ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভা করদাতাদের বিশেষ ওয়েভারের সুযোগ দিত। পুর কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, অধিকাংশ মোটা টাকার করখেলাপিরা সেই সুযোগও কাজে লাগাচ্ছেন না। এর ফলে পুরসভার কোষাগারে বড় অঙ্কের বকেয়া সম্পত্তিকর জমা পড়ছে না। এ বার তাই নতুন সিদ্ধান্ত নিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। স্থির হয়েছে, দীর্ঘ বছর ধরে বকেয়া সম্পত্তিকর না মেটালে তার সুদ ও জরিমানায় বিপুল ছাড় আর মিলবে না। নতুন বছর থেকে এই নিয়ম চালু করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। কর-রাজস্ব বিভাগের আধিকারিকদের মতে, এর ফলে আয় বাড়ার পাশাপাশি সম্পত্তিকর পরিশোধ নিয়মিত হতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া সম্পত্তিকর না মেটানোর অভিযোগ রয়েছে এক শ্রেণির নাগরিকদের বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা মোটা টাকার সম্পত্তিকর একসঙ্গে দিলে এত দিন জরিমানার ৯৯ শতাংশ ও সুদ বাবদ ধার্য টাকার ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হত। এ বার পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দীর্ঘ বছর ধরে বকেয়া কর না মেটালে সুদ ও জরিমানায় বিপুল ছাড়ের সুযোগ মিলবে না। পুরসভার কর-রাজস্ব বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সব ঠিক থাকলে আগামী জানুয়ারি থেকেই নতুন নিয়ম চালু হবে। করখেলাপিরা সম্পত্তিকর যত বেশি সময় নিয়ে পরিশোধ করবেন, ততই কমবে ছাড়।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, নতুন নিয়মে দু’বছর পর্যন্ত সম্পত্তিকরের টাকা বকেয়া রয়েছে এমন করদাতারা জরিমানা বাবদ ধার্য টাকার ৯৯ শতাংশ ও সুদ বাবদ ধার্য টাকার ৫০ শতাংশ ছাড়ের সুযোগ পাবেন। দু’বছরের বেশি ও পাঁচ বছরের কম সময়সীমায় বকেয়া কর মেটালে জরিমানা ৭৫ শতাংশ ও সুদ বাবদ ৪৫ শতাংশ মকুব হবে। পাঁচ বছরের বেশি ও দশ বছরের কম সময়ের মধ্যে বকেয়া কর পরিশোধের ক্ষেত্রে জরিমানায় ছাড় দেওয়া হবে পঞ্চাশ শতাংশ। সুদে ছাড় মিলবে পঁয়ত্রিশ শতাংশ। ১০ বছর বা তার বেশি সময় পরে সম্পত্তিকরের টাকা পরিশোধ করলে করদাতারা জরিমানায় ২৫ শতাংশ ও সুদে ৩০ শতাংশ ছাড় পাবেন।
এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘চার হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পত্তিকর পুরসভায় বকেয়া পড়ে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে করখেলাপিরা প্রত্যেকে কয়েক কোটি টাকা পুরসভাকে দীর্ঘ বছর ধরে দিচ্ছেন না। নতুন নিয়ম চালু হলে বছরের পর বছর ধরে পুরসভাকে সম্পত্তিকর না দেওয়ার অভ্যাস পাল্টাবেন অনেকেই।’’