—নিজস্ব চিত্র।
কোথাও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। কোথাও বা অনায়াসেই জয়। কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে এ দুই ছবিই দেখা গিয়েছে। মঙ্গলবার পুরভোটের ফলাফলে কোনও ওয়ার্ডে জয়ী প্রার্থীর সঙ্গে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর ব্যবধান মাত্র ৪৭ ভোটের। আবার কোনও ওয়ার্ডে ৬২ হাজারেরও বেশি ভোটের ফারাক রয়েছে ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে প্রথম ও দ্বিতীয় দুই প্রার্থীর মধ্যে।
পুরভোটে কোন পাঁচটি ওয়ার্ডে সবচেয়ে জোরদার লড়াই হয়েছে? প্রথমেই উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুরের নাম করতে হয়। ওই এলাকায় ২১ নম্বর ওয়ার্ডে মাত্র ৪৭ ভোটের ব্যবধান দেখা গিয়েছে জয়ীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রার্থীর। তৃণমূলের মীরা হাজরা ৩ হাজার ৮৫১ ভোটে জয় পেলেও তাঁকে কড়া টক্কর দিয়েছেন সিপিএমের সুজাতা সাহা। সুজাতার প্রাপ্ত ভোট ৩ হাজার ৮০৪। এর পরেই রয়েছে ১০৩ নম্বর ওয়ার্ড। পাশাপাশি, এই পুরভোটে বামেরা যে দু’টি ওয়ার্ডে জিতেছে, তার মধ্যে রয়েছে এই ওয়ার্ড। তবে সিপিএমের নন্দিতা রায় জিতেছেন মাত্র ৯২ ভোটের ব্যবধানে। তিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ৮৬২টি ভোট। অন্য দিকে, শাসকদলের প্রার্থী সুকুমার দাসের প্রাপ্ত ভোট ৫ হাজার ৭৭০। ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডেও কম প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। ওই ওয়ার্ডে সিপিএমের প্রার্থী মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তীর থেকে ২৯৪ ভোট বেশি পেয়ে জিতেছেন তৃণমূলের অরূপ চক্রবর্তী। ৮ হাজার ৭৩৪ ভোট পেয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, মৃত্যুঞ্জয় পেয়েছেন ৮ হাজার ৪৪০টি ভোট। কম ব্যবধানের নিরিখে জয়ীদের মধ্যে রয়েছেন ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের রুবিনা নাজ। নির্দল প্রার্থী রুবিনাকে ভোট দিয়েছেন ১০ হাজার ২৫ জন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের আখতারি নিজামি ৯ হাজার ৬৬৫টি ভোট পেয়েছেন। ফলে দু’জনের মধ্যে ব্যবধান মাত্র ৩৬০টি ভোটের। ৫০৯টি ভোটের ব্যবধানে ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন আর এক নির্দল প্রার্থী পূর্বাশা নস্কর (প্রাপ্ত ভোট ১১,৮৪৪)। তিনি হারিয়েছেন তৃণমূলের শিবনাথ গায়েনকে (প্রাপ্ত ভোট ১১,৩৩৫)।
গ্রাফিক—শৌভিক দেবনাথ।
প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে প্রথম দুই প্রার্থীর মধ্যে বিপুল ব্যবধানও দেখা গিয়েছে। ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের ফৈয়াজ আহমেদ খান পেয়েছেন ৬৬ হাজার ১৩৮টি ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএমের শাকিব আখতার ৪ হাজার ৯৩টি ভোট পেয়েছেন। দু’জনের মধ্যে রয়েছে ৬২ হাজার ৪৫ ভোটের ফারাক। বিজেপি-র প্রার্থী চন্দন দাসকে ৪০ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়ে ৫৮ নম্বর ওয়ার্ড দখল করেছেন তৃণমূলের সন্দীপন সাহা (প্রাপ্ত ভোট ৪৬,৬৯৭)। চন্দন পেয়েছেন ৫ হাজার ৮৭৪টি ভোট। দু’জনের মধ্যে ৪০ হাজার ৮২৩টি ভোটের ব্যবধান রয়েছে। ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৭ হাজার ৬২৩টি ভোটের ফারাক রয়েছে জয়ী এবং প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রার্থীর। তৃণমূলের প্রার্থী তথা অভিনেতা অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ী হয়েছেন ৪০ হাজার ৪৫৮। এই ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিপিএমের শিখা পূজারি ২ হাজার ৮৩৫টি ভোট পেয়েছেন। ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের জলি বসুও (প্রাপ্ত ভোট ৩৪,২১৬) বিপুল ভোটে জিতেছেন। তাঁর সঙ্গে বিজেপি-র ঐশী মাজি ৩১ হাজার ৩৮৭ ভোটে ব্যবধান রয়েছে। ঐশী পেয়েছেন ২ হাজার ৪০২টি ভোট। ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে শাসকদলের প্রার্থী জীবন সাহার নামে ৩০ হাজার ২৪টি ভোট পড়েছে। অন্য দিকে, বিজেপি-র মিলন দেড়ে পেয়েছেন ১ হাজার ১৮৬টি ভোট। দু’জনের মধ্যে রয়েছে ২৮ হাজার ৮৩৮ ভোটের ব্যবধান।
গ্রাফিক—শৌভিক দেবনাথ।