—প্রতীকী ছবি।
প্রতিদিন কলকাতা শহরে বাড়ছে ইলেক্ট্রনিক আবর্জনার চাপ। খারাপ হয়ে যাওয়া টিভি, ল্যাপটপ, মিউজিক সিস্টেম, কম্পিউটার, মাউস, কি-বোর্ড, মোবাইল, স্মার্ট ওয়াচ ইত্যাদি বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে শহরবাসীকে। শহরবাসীর এই সমস্যার সমাধান করতে নতুন উদ্যোগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ। পাড়ায় পাড়ায় শিবির করে বৈদ্যুতিন বর্জ্য কিনবে তারা। কলকাতা পুরসভার শিবিরে ওই বর্জ্য বিক্রি করলে রাজ্য সরকারের ঠিক করে দেওয়া দাম পাবেন বিক্রেতারা। সব ঠিকঠাক চললে জুন মাস থেকেই শহরের কয়েকটি ওয়ার্ডে এই শিবিরের পাইলট প্রজেক্ট শুরু করা হবে বলে জানা গিয়েছে পুরসভার একটি সূত্র মারফত।
গত কয়েক মাস ধরেই এই বিষয়ে আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছিল কলকাতা পুরসভার আধিকারিক স্তরে। সম্প্রতি এই উদ্যোগ শুরু করার বিষয়ে অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে। রাজ্য সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিবির করে পুরসভার ইলেক্ট্রনিক আবর্জনা সংগ্রহ করলে, পুরসভার কাছ থেকে সেই বর্জ্য তথ্যপ্রযুক্তি দফতর সংগ্রহ করে নিয়ে যাবে। সপ্তাহে এক দিন বা দু’দিন ওই ওয়ার্ডের কোনও পার্ক কিংবা মাঠে ক্যাম্প করা হবে। যা নিয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে আগে থেকেই ব্যানার-পোস্টার দিয়ে কিংবা মাইকে প্রচার চালানো হবে। পাশাপাশি, স্থানীয় কাউন্সিলররাও বাসিন্দাদের এই প্রসঙ্গে অবগত করবেন।
পুরসভার ওই বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, এই ধরনের বাতিল ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম অন্যান্য জঞ্জালের সঙ্গেই চলে আসছে। এগুলির মধ্যে এমন কিছু অংশ বা উপাদান রয়েছে, যা অন্যান্য জঞ্জালের সঙ্গে মিশে মাটি কিংবা বাতাসে দূষণ ছড়ায়। তাই এগুলিকে আলাদা করার প্রয়োজন রয়েছে। আপাতত কয়েকটি ওয়ার্ডে এই পরিষেবা চালু হবে। তবে বাসিন্দাদের থেকে বৈদ্যুতিন আর্বজনা কেনা হলেও, সেই লেনদেন কোনও ভাবেই নগদে হবে না। অনলাইনে সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কিংবা ইউপিআই লেনদেনের মাধ্যমে টাকা পেয়ে যাবেন বিক্রেতারা। রাজ্য সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি দফতর বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক আবর্জনার ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট দাম ঠিক করেছে। সরকারের নির্ধারিত দামেই এই বর্জ্য কিনবে কলকাতা পুরসভা।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, বিদেশে বৈদ্যুতিন আবর্জনা সংগ্রহের বন্দোবস্ত রয়েছে। সেখানেও সপ্তাহে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়। সেই উদাহরণ মেনে বাছাই করা ওয়ার্ডেই ধাপে ধাপে এই শিবির হবে। পরিস্থিতি বুঝে ওয়ার্ড ভিত্তিক সাপ্তাহিক কিংবা পাক্ষিক শিবির হবে। নিয়ম অনুযায়ী, যে সব সংস্থা ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম তৈরি করে, তারা নতুন উৎপাদনের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ই-বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করে থাকে। স্থানীয় স্তুরে বিক্রেতাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করার পর রাজ্য সরকার সেগুলি বিভিন্ন কোম্পানিকে বিক্রি করবে।