কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে মেয়রের বিধানসভার আরও এক বেআইনি নির্মাণ ভাঙার পথে পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
গার্ডেনরিচে বহুতল বিপর্যয়ের পর মুখ পুড়েছিল কলকাতা পুরসভার। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বিধানসভা কেন্দ্র কলকাতা বন্দর এলাকাতেই এমন ঘটনা ঘটায় জোর সমালোচনাও সহ্য করতে হয়েছিল তাদের। এ বার কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে মেয়রের বিধানসভার আরও এক বেআইনি নির্মাণ ভাঙার পথে পুরসভা। গার্ডেনরিচের ঘটনার পর শহরজুড়ে একের পর এক বেআইনি নির্মাণের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে কলকাতা বন্দর বিধানসভার তেমনই একটি বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে পুরসভা।
কলকাতা পুরসভার ৯ নম্বর বোরোর অন্তর্গত ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের কবিতীর্থ সরণি এলাকার ঘটনা। সেখানেই একটি পাঁচতলা বেআইনি নির্মাণের কাজ হয়েছে বলে অভিযোগ জমা পড়ে পুরসভায়। এর পরেই কলকাতা পুরসভার তরফে একাধিক বার বিষয়টি জানানো হয়েছিল ওয়াটগঞ্জ থানায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলেই অভিযোগ। কলকাতা হাইকোর্ট এ বিষয়ে পুলিসের কাছে জবাব চেয়েছে। সেই সঙ্গে অবিলম্বে ওই বেআইনি নির্মাণের জল এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে সেটি ভেঙে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করতে পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ।
সূত্রের খবর, বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ পাওয়ার পর ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে বিষয়টি নিয়ে ওয়াটগঞ্জ থানাকে ব্যবস্থা নিতে বলে কলকাতা পুরসভা। সে সময় ওই বেআইনি নির্মাণটি ছিল একতলা। কিন্তু পুরসভার তরফে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ওয়াটগঞ্জ থানার তরফে। সেই সুযোগে একতলা থেকে পাঁচতলা বেআইনি নির্মাণ করা হয়েছে। অবশেষে হাই কোর্টে মামলা দায়ের হওয়ার পর নির্মাণটি বন্ধ করতে পদক্ষেপ করে পুলিশ। কলকাতা পুরসভার দাবি, অভিযোগ পাওয়ার পর গত বছর ১৭ নভেম্বর পুর আইনের ৪০১ নম্বর ধারায় নোটিস দেওয়া হয় এবং পুলিশের কাছে এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগও জানানো হয়। পাশাপাশি, কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনারকেও (হেডকোয়ার্টার) বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তবুও ওই বেআইনি নির্মাণ বন্ধ হয়নি বলেই অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের ১৮ মার্চ এফআইআর দায়ের করা হয়।
মামলার শুনানিতে বিচারপতি নির্দেশে দিয়েছেন, গত বছর নভেম্বর মাসে পুরসভার তরফে অভিযোগ জানানোর পর পুলিশ কী করেছে, তা হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। ওই রিপোর্ট দেখেই পরবর্তী নির্দেশ দেবে হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে অবিলম্বে ওই বেআইনি নির্মাণের জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করতে হবে। এবং শীঘ্রই সেটি ভাঙার পদক্ষেপ করতে পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ১৮ জুন মামলার পরবর্তী শুনানি হবে কলকাতা হাই কোর্টে।