—ফাইল চিত্র।
ফুটপাতের সৌন্দর্যায়নে ইতিমধ্যেই দেড় কোটি টাকা খরচের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। তাই শহরের প্রায় ২৩ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে নতুন রেলিং বসানো শুরু হয়েছে। সেই রেলিং তৈরি হচ্ছে এন্টালি ওয়ার্কশপে। সেই কাজে গতি আনতে পুরকর্মীদের ‘উৎসাহ ভাতা’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। নির্বাচন ঘোষণার আগে হওয়া মেয়র পরিষদের বৈঠকে সে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। ফলে নির্বাচনী বিধিতে তা আটকাচ্ছে না বলেই পুর প্রশাসন সূত্রের খবর।
গত বছরের এপ্রিলে পুর কমিশনারের ঘরে এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, শহরের ফুটপাতে নতুন করে রেলিং বসানো হবে। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, ওই রেলিংয়ের ৫০ শতাংশ এন্টালি ওয়ার্কশপে তৈরি হবে। আর বাকি ৫০ শতাংশ তৈরি করানো হবে বাইরের সংস্থাকে দিয়ে। বাইরের সংস্থাকে দিয়ে তৈরি করানোর ক্ষেত্রে খরচ বেশি হওয়ায় পরে সে প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়। স্থির হয়, পুরো কাজটাই এন্টালি ওয়ার্কশপে হবে। সেই মতোই কাজ শুরু হয় সেখানে।
কিন্তু দ্রুত পুরো কাজ শেষ করতেই সমস্যা দেখা যায়। ওই পরিমাণ গার্ডরেল তৈরি দ্রুত শেষ করতে যত সংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন, তা নেই এন্টালি ওয়ার্কশপে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ফলে কাজে গতি আনার জন্য বিকল্প পদ্ধতি ভাবেন পুর কর্তৃপক্ষ। ঠিক হয়, একটি গার্ডরেল তৈরি করতে আগে কর্মীরা যে মজুরি পেতেন, তার বরাদ্দ বাড়ানো হবে। ‘উৎসাহ ভাতা’ পেলে কর্মীরা দ্রুত কাজ করবেন, এমনটাই ধারণা করেন পুর কর্তৃপক্ষ। আগে গার্ডরেল পিছু ৫৪০ টাকা করে পেতেন কর্মীরা, নতুন নিয়মে গার্ডরেল পিছু ৬৫০ টাকা তাঁদের দেওয়া
হবে। কর্তৃপক্ষের আশা, এই বরাদ্দ বৃদ্ধির ফলে গার্ডরেল উৎপাদনের হারও বৃদ্ধি পাবে।
এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘এই পরিকাঠামোয় পাঁচ হাজার রেলিং তৈরি করাটা মুখের কথা নয়। উৎসাহ ভাতা দিলে যদি কর্মীরা দ্রুত করেন, তা হলে আপত্তি কোথায়!’’ যদিও পুর প্রশাসনের একাংশের মত, ‘‘সেই ২০১২ সাল থেকে গার্ডরেল পিছু ৫৪০ টাকা করে পেতেন কর্মীরা। সাত বছর পরে ওই মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। তা-ও মাত্র ১১০ টাকা!
প্রশাসন সূত্রের খবর, গার্ডরেল তৈরির শুরুতে একটা বিতর্ক হয়েছিল। পুরসভার একাংশেই প্রশ্ন উঠেছে, হকার-রাজের কারণে যেখানে ফুটপাত দিয়ে হাঁটাই সমস্যার, সেখানে শুধু রেলিং বসিয়ে কী ভাবে তার সমাধান করা যাবে? হকার সমস্যার সমাধান না করে এত টাকা খরচ করার যৌক্তিকতা কোথায়? এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘হকার সমস্যার না মিটিয়ে ফুটপাতের সৌন্দর্যায়নে যাই করুন, কিছুই লাভ নেই।’’ এন্টালি ওয়ার্কশপের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ সামসুজ্জামান আনসারি
যদিও বলেন, ‘‘বরাত অনুযায়ী গার্ডরেল তৈরির কাজ চলছে। অনেক জায়গায় গার্ডরেল বসানোও হয়ে গিয়েছে। এটা হলে পথচারীরা ফুটপাত ধরে হাঁটতে পারবেন।’’