প্রতি দিন গড়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন আবর্জনার ভার নিতে হচ্ছে ধাপাকে। —নিজস্ব চিত্র।
জঞ্জালের বিপুল চাপ, তবুও বিকল্প জমি চিহ্নিত করে তা ব্যবহারযোগ্য করে উঠতে পারল না কলকাতা পুরসভা। নিজের ‘বোঝা’ তো রয়েইছে, উল্টে সল্টলেক এবং রাজারহাটের জঞ্জালের চাপ নিতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে ধাপা-র। প্রতি দিন গড়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন আবর্জনার ভার নিতে হচ্ছে ধাপাকে।
এই বিপুল পরিমাণ জঞ্জালের চাপ থেকে মুক্ত হতে গত কয়েক বছর ধরেই বিকল্প জমির খোঁজ চালাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রসপুঞ্জ এবং উত্তর ২৪ পরগনার রাজারহাট এলাকায় বিকল্প জমি চিহ্নিত হলেও, তা পরিমাণে অনেকটাই কম। তা ছাড়াও বিভিন্ন কারণে ওই জমি ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, ধাপার বিকল্প হিসেবে নতুন একটি ভাগাড় তৈরির জন্য রসপুঞ্জে প্রায় ১০৫ বিঘা জমি চিহ্নিত করেছেন পুরকর্তারা। জায়গাটি এক লপ্তে মেলেনি। তাতে রয়েছে ছোট ছোট অনেক জমি। ওই জমিগুলি ধাপে ধাপে নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রাজারহাটের কাছে ২০ একরের একটি জমিও চিহ্নিত করা হয়েছে। এই মুহূর্তে ধাপার যেখানে আবর্জনা ফেলা হয়, তা ২৩ হেক্টর জমির উপরে। আগে যেখানে জঞ্জাল ফেলা হত, সেই ১২ হেক্টর জমিতে বিনোদন পার্ক তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে পুরসভার।
সোমবার ধাপায় মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবব্রত মজুমদার (বাঁ-দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
সমপরিমাণের জমি কলকাতার আশপাশে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহের সময়, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে পুরসভা। যে বর্জ্য থেকে সার বানানো সম্ভব সেগুলি সংগ্রহের সময়ই যাতে আলাদা করা যায়, তার পরীক্ষামূলক পদক্ষেপ শুরু হয়েছে ২৭টি ওয়ার্ডে। ওই কাজ যাতে আরও গতি পায়, সে জন্য বিশেষ ব্যাটারিচালিত গাড়ির মাধ্যমে জঞ্জাল সংগ্রেহের পদক্ষেপ করেছে পুরসভা। এর পাশাপাশি ধাপার জঞ্জালকে ‘বায়ো মাইনিং’-এর মাধ্যমে (প্রতিদিন ৫০০ মেট্রিক টন) আলাদা করে বিশেষ পদ্ধতিতে জৈব সারে পরিণত করা হচ্ছে বেসরকারি কোম্পানির তত্ত্বাবধানে (পিপিপি মডেল)।
আরও পড়ুন: স্তব্ধ না হলেও শম্বুক গতি, টালা সেতুর চাপ সামলাতে হিমশিম পুলিশ
আরও পড়ুন: এলআইসি শেয়ারের প্রতিবাদে পথে কর্মচারীরা, কাল কর্মবিরতি দেশ জুড়ে
পুরসভা সূত্রে খবর, প্রতি দিন প্রায় ২০০ মেট্রিক টন উৎপাদিত সার বিভিন্ন কোম্পানি কিনছে ধাপা থেকে। —নিজস্ব চিত্র।
পুরসভা সূত্রে খবর, প্রতি দিন প্রায় ২০০ মেট্রিক টন উৎপাদিত সার বিভিন্ন কোম্পানি কিনছে ধাপা থেকে। এর পরেও চাপ রয়েছে— এমনটাই জানাচ্ছেন পুর কর্তারা। সোমবার ধাপায় এই গোটা কর্মকাণ্ড সংবাদমাধ্যমকে ঘুরিয়ে দেখান মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবব্রত মজুমদার। তাঁর কথায়, “শহরকে জঞ্জালমুক্ত করতে নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে। জৈব সার উৎপাদন থেকে শুরু করে বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহের পদ্ধতিতেও বদল আনা হচ্ছে। রাস্তায় নামানো হবে ব্যাটারিচালিত গাড়ি। ই-বর্জ্যও মাথাব্যথার বিষয় হয়ে উঠেছে। সে বিষয়েও চিন্তাভাবনা চলছে।”