—ফাইল চিত্র।
অগ্নিকাণ্ডের পর পেরিয়ে গিয়েছে দু’দিন। ফের পুরোদমে চালু হয়ে গিয়েছে মেট্রো চলাচল। কিন্তু বিপর্যয়ের কারণ ব্যাখ্যা করা দূরস্থান, যাত্রীদের ন্যূনতম মৌখিক আশ্বাসটুকুও দেননি মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে কোনও প্রশ্ন করলেই তাঁদের জবাব, ‘কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি’ (সিআরএস) ঘটনার তদন্ত করছে।
যদিও রেল কর্তাদের একাংশই বলছেন, আগামিকাল, সোমবার থেকে তদন্ত শুরু করবে সিআরএস। এটি একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিদিন মেট্রোয় যাতায়াত করতে কার্যত বাধ্য হন। কাল, সোমবার ইংরেজি বর্ষশেষ এবং মঙ্গলবার, নববর্ষ। এ সময়ে মেট্রোয় ভিড় বাড়বে। ফলে যাত্রীদের আস্থা অর্জনের জন্য প্রাথমিক অনুসন্ধান করে একটা স্পষ্ট বার্তা দেওয়া উচিত ছিল। রেল বোর্ডের এক কর্তার কথায়, ‘‘মেট্রোর জনসংযোগ বিভাগের উচিত ছিল, এগিয়ে এসে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলা এবং তাঁদের আশ্বস্ত করা। তাঁরা যে বিষয়টি নিয়ে সত্যিই বিব্রত, তা-ও বোঝানো উচিত ছিল। তাতে মেট্রোর ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও কম ক্ষুণ্ণ হত। কিন্তু কিছুই হয়নি।’’
রেলের এক অবসরপ্রাপ্ত কর্তার মতে, দুর্ঘটনার পরে নজরদারি, যাত্রী সুরক্ষায় নতুন পদক্ষেপ কী করা হচ্ছে, রক্ষণাবেক্ষণে কী নতুন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তা জানানো হলে যাত্রীদের আস্থা অর্জন করা যায়। এই প্রসঙ্গেই তিনি সাঁতরাগাছি স্টেশনের ফুটব্রিজে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার ঘটনাস্থলে গিয়ে একাধিক পদক্ষেপের কথা জানিয়েছিলেন। এ ক্ষেত্রেও তেমনটা করা যেত। যদিও এক নিত্যযাত্রীর মন্তব্য, ‘‘দুর্ঘটনার পরেও মেট্রো কোনও পদক্ষেপ আদৌ করেছে কি?’’
আরও পড়ুন: বৈদ্যুতিক সমস্যায় আগুন জুটমিলে
মেট্রো রেল কর্তাদের একাংশ অবশ্য বলছেন, ঘটনার পরে রেল বোর্ড যে ভাবে নড়েচড়ে বসেছে, তাতে আরও ঘাবড়ে গিয়েছেন শীর্ষ কর্তারা। কেন বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে এবং কেন সেই সংক্রান্ত তথ্য যথাযথ ভাবে দিল্লির রেল ভবনে পাঠানো হচ্ছে না, তা জানার জন্য শুক্রবার তলব করা হয়েছিল মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার পি সি শর্মাকে। ওই দিন সন্ধ্যায় শহরে ফিরে তিনি বাকি পদস্থ কর্তাদের নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন। তার পর থেকেই মেট্রোর সব কর্তা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। এই দুর্ঘটনার জেরে পদস্থ কর্তাদের উপরে কোপ পড়বে কি না, সেই প্রশ্ন ঘুরছে কলকাতার মেট্রো ভবনের অন্দরে।