প্রতীকী ছবি
মাদক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া এক ব্যক্তিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার ফাঁসির সাজা রদ করে ওই ব্যক্তিকে ৩০ বছর কারাবাসের নির্দেশ দিল।
সাজাপ্রাপ্তের নাম আনিসুর রহমান। ৭৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় জানান, ১৯৯৭ সালে তাঁর মক্কেল কলকাতা পুলিশ এলাকা থেকে আড়াই কেজি হেরোইন সমেত ধরা পড়েছিলেন। বছর পাঁচেক জেল খাটার পরে তিনি জামিন পান এবং জামিনের শর্ত লঙ্ঘন করে পালিয়ে যান। ২০০২ সালে ফের ধরা পড়েন। সেই সময়ে আনিসুর সল্টলেকে ভাড়া থাকতেন। কেন্দ্রের নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বুরোর অফিসারেরা তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সাড়ে তিন কিলোগ্রাম হেরোইন বাজেয়াপ্ত করেন। আনিসুরকেও বারাসত আদালতে তোলা হয়। তখন থেকে জেল হেফাজতে রয়েছেন তিনি।
জয়ন্তনারায়ণবাবু জানিয়েছেন, জেল হেফাজতে থাকাকালীনই ২০০৬ সালে নগর দায়রা আদালত আনিসুরকে আড়াই কিলোগ্রাম হেরোইনের মামলায় ৩০ বছর কারাবাসের আদেশ দেয়। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল মামলা করেন আনিসুর। ২০১২ সালে হাইকোর্ট সাজার মেয়াদ কমিয়ে ১৪ বছর করে। অন্য দিকে, সাড়ে তিন কিলোগ্রাম হেরোইনের মামলায় বারাসত আদালত ওই ব্যক্তিকে ২০১৬ সালে ফাঁসির আদেশ দেয়। কারণ মাদক আইনে বলা ছিল, পরপর দু’বার একই অপরাধ করলে দোষীকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া বাধ্যতামূলক।
ইতিমধ্যে রাজ্য আইনি পরিষেবা বিভাগের সহায়তায় ফাঁসির আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল মামলা করেন আনিসুর। তাঁর আইনজীবী আদালতে জানান, ২০১৪ সালে সংশোধিত মাদক আইনে বলা হয়েছে, পরপর দু’বার একই অপরাধ করলেও ফাঁসি বাধ্যতামূলক নয়। সুতরাং সাজা পরিমার্জন করুক আদালত। নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বুরোর আইনজীবী জীবন চট্টোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চে জানান, আনিসুর যখন ধরা পড়েছিলেন সেই সময়ে আইন সংশোধন হয়নি। কাজেই ফাঁসির আদেশ বহাল থাকুক। তা না হলে সমাজে ভুল বার্তা পৌঁছবে। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে সাজা কমিয়ে ৩০ বছর করে ডিভিশন বেঞ্চ।
আনিসুরের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল ইতিমধ্যেই ১৭ বছর জেল খেটেছেন। আর ১৩ বছর তাঁকে জেলে থাকতে হবে।