জোরকদম: চলছে রাস্তা সারাইয়ের কাজ। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
একটু বৃষ্টিতেই জল দাঁড়িয়ে যেত বাইপাস সংলগ্ন এলাকায়। রাস্তাও ছিল এবড়ো-খেবড়ো। ফলে, অসুবিধায় পড়তেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত মুকুন্দপুর এলাকার ছবিটা ছিল অনেকটা এ রকমই। এই অঞ্চলেই রয়েছে কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল। ফলে, ভিড় লেগে থাকে। সম্প্রতি পুরসভার উদ্যোগে এই এলাকার রাস্তা এবং নিকাশির উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্ষার আগেই এই কাজ শেষ করা হবে।
আত্মীয়কে হাসপাতালে নিয়মিত নিয়ে আসতে হয় দমদমের বাসিন্দা সৈকত চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে যাতায়াতের সূত্রে দেখেছি এই অঞ্চলে রাস্তার হাল খুবই খারাপ। নিকাশির অবস্থাও তথৈবচ। সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমে যায়। তখন রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে আসতে বেশ বেগ পেতে হয়। রাস্তার দ্রুত সংস্কার জরুরি।’’ স্থানীয় বাসিন্দা পল্লবী সাহা বলেন, ‘‘এতই ধুলো ওড়ে যে নাকে রুমাল চেপে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। তার সঙ্গে যানজটের সমস্যা তো এই রাস্তায় নিত্যসঙ্গী।’’
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) রতন দে বলেন, ‘‘বাইপাস সংলগ্ন মুকুন্দপুর এবং পঞ্চসায়র অঞ্চলের রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। কলকাতা পুরসভা থেকেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য প্রায় এক কোটি টাকা খরচ হবে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনের রাস্তায় কালভার্ট, ডবল লেন এবং ‘সারফেস ড্রেন’ করার কাজ চলছে। অন্য দিকে, এই এলাকার কাছেই পঞ্চসায়রে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এই রাস্তা ‘কবি সুভাষ’ মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত সম্প্রসারণ করার কথাও ভাবা হয়েছে। এই রাস্তায় খোলা ড্রেন আছে। সেই ড্রেন বন্ধ করতে ভূগর্ভস্থ নিকাশির কাজ চলছে। বর্ষার আগেই এই কাজ শেষ করা হবে বলেও পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি।
কলকাতা পুরসভার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনন্যা বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই অঞ্চলে কয়েকটি হাসপাতাল থাকায় প্রচুর ভিড় হয়। সুতরাং রাস্তা ঠিক থাকা জরুরি। তাই এই কাজ শুরু হয়েছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৫ সালের পরেই এই রাস্তায় কাজের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু উন্নয়ন প্রকল্পে কোনও অর্থ বরাদ্দ না থাকায় কাজ একেবারেই এগোয়নি। শুধু রাস্তাই নয়, এখানে নিকাশির অবস্থাও খারাপ ছিল। ফলে জল জমা এখানকার অন্যতম সমস্যা ছিল। শুধু হাসপাতালই নয়, আশপাশে অনেক গেস্টহাউস রয়েছে। যেখানে রোগীর পরিজনেরা থাকেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুর-কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে বারবার জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। তাঁদের অভিযোগ, খারাপ এই রাস্তায় অনেক দুর্ঘটনাও ঘটছে। পুলিশ সূত্রের খবর, পুরসভার সঙ্গেও এই ব্যাপারে আলোচনা হয়েছিল। রাস্তা ঠিক হলে যাতায়াতের সুবিধা হবে বলে পুলিশের দাবি।