—ফাইল চিত্র।
দিল্লি তো বটেই, কলকাতার সাম্প্রতিক সময়ের দূষণের সব রেকর্ডও ভেঙে দিল সোমবার সন্ধ্যার দূষণ। বি টি রোডের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এ দিন বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার (পিএম ১০) পরিমাণ ছিল স্বাভাবিক মাত্রার থেকে প্রায় ১১ গুণ বেশি! এমনিতে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ওই এলাকার দূষণ ধারাবাহিক ভাবেই পরিবেশকর্মী-গবেষকদের আলোচনায় এসেছে। কিন্তু এ দিনের দূষণ সব জল্পনাকে ছাপিয়ে গিয়েছে।
যদিও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তাদের একাংশ জানান, ওই এলাকায় নির্মাণকাজ চলছে। ইমারতি দ্রব্য নিয়ে গাড়ি গেলে ভাসমান ধূলিকণা অস্বাভাবিক বেড়ে যাচ্ছে। সূত্রের খবর, এ দিন ওই চত্বরে সন্ধ্যা ৬টায় পিএম ১০-এর পরিমাণ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১১১০.০৭ মাইক্রোগ্রাম। দিল্লির আনন্দবিহারে সারা দিনে যেখানে গড়ে সেই পরিমাণ ছিল ৪১৮!
দিনের শুরু থেকেই একটি ‘অশনি সঙ্কেত’ ছিল। সকাল ৬টায় রবীন্দ্রভারতী চত্বরে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৫৪৯.১ মাইক্রোগ্রাম। সকাল ১০টায় ছিল ৪৪২.০৩। পরে সন্ধ্যা ৬টায় সেই পরিমাণ ১১ গুণ বেড়ে যায়। যদিও সন্ধ্যা সাতটায় সেই পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৫১.১৭ মাইক্রোগ্রামে।
তবে গবেষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এক ঘণ্টার দূষণের মাত্রা দিয়ে পুরো পরিস্থিতি বিচার করাটা ঠিক হবে না। এমনিতে শীতকাল হওয়ায় তার একটা প্রভাব রয়েছেই। সেই সঙ্গে আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, বাতাসের গতি এ দিন শূন্য ছিল। ফলে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ বেড়ে গিয়ে থাকলে, তা আর ছড়িয়ে পড়তে পারেনি।
পর্ষদের কর্তারাও জানাচ্ছেন, ওই এলাকায় এমনিতেই সিমেন্ট ওঠানো-নামানোর কাজ হয়। সেটাও দূষণের অন্যতম কারণ। তা ছাড়া, ওই এলাকায় নির্মাণের কাজ চলছে। সেখানে কোনও ব়ড় লরি আসার ফলেই সম্ভবত ওই নির্দিষ্ট মুহূর্তে পিএম ১০ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গিয়েছে। পর্ষদের এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রতি ঘনমিটারে গড়ে ৫০০ মাইক্রোগ্রাম থাকার তবু কোনও কারণ থাকতে পারে। কিন্তু হাজার পেরিয়ে যাওয়াটা সত্যিই অস্বাভাবিক।’’
কিন্তু সেই যুক্তি মানতে নারাজ পরিবেশকর্মীদের একাংশ। তাঁদের যুক্তি, নির্মাণস্থল থেকে দূষণ ঠেকানোর জন্যও নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। নির্মাণস্থল ঢেকে কাজ করা বা ইমারতি দ্রব্য নিয়ে লরিতে যাতায়াতের সময়ে তা ঢেকে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও কলকাতা পুরসভার তো যৌথ ভাবে সে কাজ করার কথা। কিন্তু শহরে সে সব হচ্ছে কই?