প্রতীকী ছবি
ক্যাবে উঠে দরকারি জিনিস ভুলে ফেলে যাওয়ার নিরিখে প্রথম স্থানে মুম্বই। আর অন্যদের টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে কলকাতা। কলকাতার এই ‘কৃতিত্বে’ পিছনে পড়ে গিয়েছে দিল্লি এবং বেঙ্গালুরুর মতো ব্যস্ত শহরও। গত এক বছরে জিনিসপত্র ক্যাবে ভুলে যাত্রীদের নেমে যাওয়ার এই প্রবণতা খতিয়ে দেখে সম্প্রতি দেশের দশটি শহরের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে একটি অ্যাপ-ক্যাব সংস্থা।
প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ভুলো মনের কারণে অ্যাপ-ক্যাব থেকে নামার সময়ে যাত্রীদের ফেলে যাওয়া জিনিসের তালিকাটি বেশ দীর্ঘ এবং চিত্তাকর্ষক। সেখানে অহরহ ফেলে যাওয়া জিনিসের মধ্যে মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ, ছাতা, হেডফোন, চশমা বা চাবির গোছার মতো অনেক কিছুই রয়েছে। আবার, একটি মাত্র গোলাপ, টেডি বিয়ার, বেলুন, নকল দাঁতের পাটি, এসির রিমোট, ঝাঁটা, পরীক্ষার নোটসও ফেলে যান অনেকে। এমনকি সেনাবাহিনীর লোকজনকেও জুতো ফেলে যেতে দেখা যাচ্ছে।
দিনের কোন সময়ে বা সপ্তাহের কোন কোন দিনে যাত্রীদের কী কী ধরনের দরকারি জিনিস ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বেশি, তা-ও ঘটনা পরম্পরা বিশ্লেষণ করে খতিয়ে দেখেছে উব্র নামে ওই অ্যাপ-ক্যাব সংস্থা। প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, দুপুরের খাবারের সময় ২টো থেকে ৩টে-র মধ্যে যাত্রীদের ভুলে যাওয়ার প্রবণতা সব চেয়ে বেশি। সপ্তাহ ফুরিয়ে আসার মুখে বৃহস্পতি এবং শুক্রবারেও জিনিস ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে যাত্রীদের।
সোম এবং শুক্রবার যাত্রীদের একাংশের বিজনেস কার্ড হোল্ডার ফেলে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। মঙ্গল, বুধ এবং বৃহস্পতিবার ক্যাবে দুপুরের খাবারের প্যাকেট বা টিফিনের বাক্স ফেলে যাওয়ার ঘটনা বেশি ঘটে। শনি-রবিবার আবার গিটার ফেলে যাওয়ার প্রবণতাও চোখে পড়েছে।
গত তিন বছর ধরে ভুলে যাওয়ার মিটারে শীর্ষে থাকার পরে এ বছর বেঙ্গালুরু নেমে গিয়েছে পঞ্চম স্থানে। উপরের দিকে উঠে এসেছে মুম্বই, কলকাতা এবং ইলাহাবাদ।
মনোবিদদের একাংশের মতে, ভুলে যেতে চাওয়া আসলে এক রকমের স্বাধীনতা। যা প্রায়ই মানুষ নিজের অজান্তে ব্যবহার করেন। দৈনন্দিন কাজের অতি দরকারি জিনিসও কখনও-সখনও মানুষ ভুলে যান অন্য কিছু মনে রাখার প্রয়োজনকে জায়গা ছেড়ে দিতে গিয়ে।
মনোবিদ মোহিত রণদীপের ব্যাখ্যা, ‘‘সব ভুলে যাওয়াকে এক রকম ভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না। পরিবেশ-পরিস্থিতির প্রভাবও মানুষের ভুলে যাওয়ার পিছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে।’’ গোলাপ ফুল, টেডি বিয়ার, নকল দাঁতের পাটি, এসির রিমোট কিংবা পরীক্ষার নোটস আপাতদৃষ্টিতে খুবই সাধারণ জিনিস। কিন্তু এ সব জিনিস ভুলে যাওয়ার পিছনেও কি কাজ করে ভুলে যাওয়ার স্বাধীনতা? না কি এটা পরিবেশ পরিস্থিতির প্রভাব? বলতে পারবেন একমাত্র ভুক্তভোগীরাই।