কলকাতা বিমানবন্দর।
যত দিন যাচ্ছে ভিড় ততই বেড়ে চলেছে কলকাতা বিমানবন্দরে। প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৩১ হাজার যাত্রী কলকাতা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে উড়ে যাচ্ছেন। টার্মিনালের দোতলায় ডোমেস্টিক ডিপারচারে নিরাপত্তা বেষ্টনীর সামনে দীর্ঘ লাইনে দেরি হওয়ার কারণে উড়ান ধরতে পারেননি যাত্রী— এমন ঘটনাও সম্প্রতি ঘটতে শুরু করেছে।
উড়ান সংস্থার কর্তাদের অভিযোগ, যাঁরা কলকাতা শহর থেকে এসে উড়ান ধরছেন, তাঁদের ভিড় তো রয়েছেই। তার সঙ্গে নিরাপত্তা বেষ্টনীর সামনে যোগ দিচ্ছেন অন্য শহর থেকে বিমানে কলকাতায় এসে আবার অন্য শহরে উড়ে যাওয়া যাত্রীরা। এঁদের ট্রানজ়িট যাত্রী বলা হয়। তাঁরা শহরে ঢোকেন না। প্রধানত গুয়াহাটি, আগরতলার মতো উত্তর-পূর্ব ভারতের শহর থেকে কলকাতায় এসে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু যান তাঁরা। আবার ফেরার সময়েও কলকাতা ছুঁয়ে যান ওই যাত্রীরা। একটি উড়ান সংস্থার এক কর্তার কথায়, ‘‘দেশের অন্য বিমানবন্দরে খোঁজ নিয়ে দেখুন। সেখানে ডোমস্টিক ট্রানজ়িট যাত্রীদের জন্য আলাদা নিরাপত্তা বেষ্টনী রয়েছে। বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল বিভাগেই নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে তাঁরা ফের বোর্ডিং গেটের কাছে পৌঁছে যেতে পারেন। এর ফলে, ওই ট্রানজ়িট যাত্রীরা ডিপারচারের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ভিড় করেন না।’’
কলকাতাও অবশ্য এ বার সেই পথে হাঁটতে চলেছে। মার্চ মাসের মধ্যেই কলকাতা বিমানবন্দরের অ্যারাইভালে ডোমেস্টিক ট্রানজ়িট যাত্রীদের জন্য নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি হয়ে যাচ্ছে। কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, অ্যারাইভালে ১ নম্বর ব্যাগেজ বেল্টের কাছে নতুন এই নিরাপত্তা বেষ্টনী চালু হলে ভিড় কমবে দোতলার নিরাপত্তা বেষ্টনীর সামনে। তিনি বলেন, ‘‘একতলায় নতুন এই বেষ্টনী পেরিয়ে যাতে ট্রানজ়িট যাত্রীরা দোতলায় এরোব্রিজের বোর্ডিং গেটে পৌঁছতে পারেন, তার জন্য দু’টি নতুন লিফ্ট বসানো হচ্ছে। যাত্রীদের জন্য সেখানে আলাদা শৌচালয়ও তৈরি হচ্ছে।’’
কলকাতা থেকে কিছু উড়ানের যাত্রীদের আবার একতলা থেকে বাসে উঠে দূরে দাঁড়ানো বিমানের কাছে পৌঁছতে হয়। অধিকর্তা জানিয়েছেন, ডোমেস্টিক ট্রানজ়িট যাত্রীরা আগে থেকেই জেনে যাবেন তাঁকে বাসে করে বিমানে পৌঁছতে হবে কি না। সে ক্ষেত্রে অ্যারাইভালে নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে যাত্রীরা যাতে বাস-বোর্ডিং গেটে পৌঁছতে পারেন, তার জন্য আলাদা পথ করা হয়েছে। বাস বোর্ডিং-এর ভিড় সামলাতে সেখানেও দু’টি অতিরিক্ত গেট বসানোর কাজ চলছে বলে কৌশিকবাবু জানিয়েছেন।
তবে, শুধু নিরাপত্তা বেষ্টনী বানালেই হবে না। সেখানে দরকার নিরাপত্তা কর্মীর। এ কারণে সিআইএসএফ-এর কাছ থেকে অতিরিক্ত লোকবলও চাওয়া হয়েছে। এই ব্যবস্থা চালু করতে বুরো অব সিভিল এভিয়েশন সিকিওরিটি (বিসিএএস)-এর অনুমতির জন্যও দরখাস্ত করা হয়েছে বলে কৌশিকবাবু জানিয়েছেন।
বিদেশ থেকে বিমানে এসে যাঁরা অন্য শহরে উড়ে যান, সেই আন্তর্জাতিক ট্রানজ়িট যাত্রীদের ক্ষেত্রে অবশ্য সর্বত্রই এক নিয়ম। নিজেদের মালপত্র নিয়ে শুল্ক দফতর পেরিয়ে তাঁদের আবার ডিপারচার দিয়েই অন্য শহরে যেতে হয়।