ফাইল চিত্র।
এলাকাভিত্তিক ডিজিটাল মানচিত্রের মধ্যে সহজেই শহর এবং বাহিনীর পরিকাঠামোর খুঁটিনাটি পেতে চায় লালবাজার। তাই থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডকে ‘জিয়োগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেমের’ (জিআইএস) মাধ্যমে সেই খুঁটিনাটি পূরণের নির্দেশ দিয়েছেন শীর্ষকর্তারা। সেখানে কোন থানা এলাকায় পুরসভার কোন কোন বরো রয়েছে, সিইএসসি-র কোন ডিভিশনের অন্তর্গত, কোনও সভাস্থল আছে কি না— সেই সংক্রান্ত সব তথ্যই জানাতে হবে। জিআইএস প্রযুক্তির মাধ্যমে নানাবিধ তথ্য পূরণের ভার দেওয়া হয়েছে ট্র্যাফিক গার্ডকেও। শহরে কোথায় কোথায় দুর্ঘটনা হয়েছে, দুর্ঘটনার ব্ল্যাক স্পট কোথায়— সে সব তথ্যই সেখানে আপলোড করতে হবে।
লালবাজার সূত্রের খবর, ২০১৮ সালে ওই এলাকাভিত্তিক ডিজিটাল ম্যাপ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল, যাতে বিভিন্ন তথ্য আপলোড করার কথা ছিল। সেই মতো কাজও শুরু হয়। সেই ডিজিটাল ম্যাপে বিভিন্ন থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডের সীমানা নির্ধারণও করা হয়। কিন্তু তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই বন্ধ হয়ে যায়।
তবে বর্তমান পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল দায়িত্ব নিয়েই শহর এবং বাহিনীর পরিকাঠামোর খুঁটিনাটি বা অপরাধের তথ্য মাউসের একটি ক্লিকের অধীনে আনার নির্দেশ জারি করেন। সেই মতো গত দু’সপ্তাহ ধরে লালবাজারের ওই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারেরা ট্র্যাফিক গার্ড এবং থানার ওসিদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করেন। সেখানে ওসি হিসাবে তাঁদের কী কী দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা দেখানো হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশের প্রতিটি থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডের পৃথক ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে আলাদা ভাবে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থান অর্থাৎ স্কুল, মন্দির, খেলার মাঠ, সরকারি অফিস— সব কিছু চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। প্রযুক্তির সাহায্যে এমন ভাবে এক-একটি ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে, যাতে প্রতিটি থানা বা ট্র্যাফিক গার্ডের এলাকা নিখুঁত ভাবে বোঝা যায়।এর পরে সেখানে কোথায় কোথায় সিসি ক্যামেরা রয়েছে, তা-ও ম্যাপে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে কলকাতা পুলিশের অধীনস্থ সব স্পিড ট্র্যাফিক ক্যামেরা যেমন থাকছে, তেমনই রয়েছে সাধারণ সিসি ক্যামেরা সংক্রান্ত তথ্যও।
ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, ট্র্যাফিক বিভাগের সব খুঁটিনাটি মাউসের একটি ক্লিকে যাতে সামনে আসে, সে জন্য এই নতুন ব্যবস্থায় কোথায় দুর্ঘটনা ঘটেছে তা যেমন থাকছে, তেমনই কোন রাস্তায় কত গতিতে গাড়ি চলবে বা ট্র্যাফিকের নির্দেশ বোর্ড কোথায় কোথায় রয়েছে— তা-ও জানা যাবে।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকর হলে কলকাতা পুলিশের টহলদার গাড়ি কোথায় কোথায় রয়েছে, কিউআরটি ভ্যান কোথায় আছে বা নাকা-তল্লাশি কোথায় চলছে— তা-ও জিআইএস ম্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে। কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, এই ব্যবস্থায় যে কোনও তথ্য জানার বিষয়ে দীর্ঘসূত্রতা কাটবে। তেমন ভাবে এক-জানলা ব্যবস্থার মাধ্যমে যে কেউ শহরের সব তথ্য জানতে পারবেন।