ধারের আবর্জনা দিয়ে সার বানাবে কেএমডিএ

কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘পচনশীল বর্জ্য নষ্ট না করে উন্নত পদ্ধতিতে সার তৈরির পরিকল্পনা অনেক দিন আগেই নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪৪
Share:

—ফাইল চিত্র

কলকাতা পুরসভা থেকে এ বার জঞ্জাল ধার নেবে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। শর্ত সাপেক্ষে পুরসভার জঞ্জাল দফতর কেএমডিএ-কে ওই বর্জ্য দিতে রাজিও হয়েছে। রবীন্দ্র সরোবরে সার তৈরির জন্য প্রস্তাবিত প্লান্টে বর্জ্য পদার্থ জোগানের জন্যই আপাতত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘পচনশীল বর্জ্য নষ্ট না করে উন্নত পদ্ধতিতে সার তৈরির পরিকল্পনা অনেক দিন আগেই নেওয়া হয়েছে। রবীন্দ্র সরোবরে এই ধরনের প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। বর্জ্য পদার্থের ঘাটতি থাকলে কলকাতা পুরসভা সংশ্লিষ্ট দফতরকে জোগান দেবে।’’ আপাতত লেক গার্ডেন্স সুপার মার্কেট এবং গড়িয়াহাট বাজারের যাবতীয় পচনশীল বর্জ্য পদার্থ কেএমডিএ সরোবরের ওই প্লান্টে ফেলবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কলকাতা পুরসভার বর্জ্য অপসারণ দফতরের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘পুরসভার পরিবর্তে কেএমডিএ ওই বর্জ্য অপসারণ করতেই পারে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে তাদের প্রতিদিন ওই জঞ্জাল পরিষ্কার করতেও হবে। তা না হলে সমস্যা তৈরি হবে। সেই বিষয়ে পুর দফতর কেএমডিএ-র সঙ্গে আলোচনা করবে।’’

Advertisement

কেএমডিএ সূত্রের খবর, রবীন্দ্র সরোবরে প্রচুর পরিমাণে পাতা পড়ে। এ ছাড়া জলাশয় থেকেও প্রচুর কচুরিপানা, শ্যাওলা এবং বিভিন্ন ধরনের জলজ উদ্ভিদ তুলে তা সরোবরের এক প্রান্তে রাখা হয়। সেগুলি সরোবর চত্বর শুধুমাত্র নোংরাই করে না, পচনশীল ওই পদার্থ থেকে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়ায় বলেও প্রাতর্ভ্রমণকারীদের একাংশ অনেক দিন ধরে অভিযোগ করেছেন। সেই কারণেই সরোবরের সমস্ত জঞ্জাল একটি প্লান্টে রেখে আধুনিক পদ্ধতিতে গাছের জন্য সার তৈরি করা হবে।

প্রস্তাবিত দু’টি প্লান্টে সার তৈরির জন্য দৈনিক ১০০০ কিলোগ্রাম জঞ্জাল প্রয়োজন। কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানান, মাস দু’য়েক আগে সরোবর থেকে জঞ্জাল পাওয়ার একটি সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, সেখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৬০০ কিলোগ্রাম জঞ্জাল পাওয়া যায়। বাকি জঞ্জাল পুর এলাকা থেকে আনা হবে। উৎপন্ন সার কেএমডিএ তাদের নিজেদের বাগান তৈরি ছাড়াও অন্য সরকারি দফতরের গাছ অথবা বাগান তৈরিতে ব্যবহার করতে পারে। তার পরেও যে পরিমাণ অবশিষ্ট থাকবে, তা বাজারে বিক্রি করা হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানান।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের শিক্ষক পুনর্বসু চৌধুরী বলেন, ‘‘যে কোনও ভাল মানের জৈব সার তৈরিতে প্রয়োজন নাইট্রোজেন, ফসফরাস, এবং পটাসিয়াম (এনপিকে)। এই তিনটের অভাব হলেই ভাল সার তৈরি হয় না। ভাল সার দেওয়া না হলে গাছও ভাল হবে না। ফলে, এই ধরনের সার তৈরিতে জৈব পচনশীল আবর্জনা যা বাজারে পাওয়া যায় তার প্রয়োজন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement