ফাইল চিত্র।
প্রায় চার দশক আগে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ২৬টি আবাসন এবং কয়েকটি আবাসন সংলগ্ন জায়গায় বাজার তৈরি করেছিল কলকাতা উন্নয়ন পর্ষদ (কেআইটি)। আবাসনগুলি মূলত ভাড়া দেওয়া হত। পরবর্তীকালে কেএমডিএ-র সঙ্গে কেআইটি মিশে যাওয়ায় ওই আবাসন এবং বাজার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বর্তায় কেএমডিএ-র উপরে। কিন্তু সেগুলি থেকে প্রাপ্ত ভাড়ার অঙ্ক অত্যন্ত কম হওয়ায় ফ্ল্যাটগুলি বিক্রির পরিকল্পনা করে সংস্থা। সে ক্ষেত্রে আবার সমস্যা দেখা দেয় দু’টি। প্রথমত, অনেকে ওই ফ্ল্যাট কিনতে রাজি হননি। দ্বিতীয়ত, অধিকাংশ আবাসনের ফ্ল্যাটের আসল মালিকের খোঁজ পাওয়া যায়নি। ফলে ফ্ল্যাট বিক্রির পরিকল্পনা স্থগিত হয়ে যায়। বর্তমানে সেখানকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দিয়ে যৌথ উদ্যোগে ওই আবাসনগুলির সংস্কার এবং প্রয়োজনে নতুন করে নকশা তৈরি করে সেখানে বহুতল তৈরির সিদ্ধান্ত নিচ্ছে রাজ্য।
রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘আবাসনগুলি নিয়ে সমস্যা বহু দিনের। সেগুলি বিক্রিও করা যাচ্ছে না। তাই সকলের সুবিধার্থে নতুন এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’ কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এ ভাবে আবাসনগুলির অবস্থার উন্নতি ঘটানো ছাড়াও সেই সংলগ্ন যতটা জমি অব্যবহৃত পড়ে আছে, তা কাজে লাগানো সম্ভব। আবাসনগুলির বর্তমান হাল কেমন, তার সমীক্ষার জন্য রাজ্য সরকারের নথিভুক্ত ‘ট্রানজ়াকশন অ্যাডভাইসর’ নিয়োগ করার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ওই সমীক্ষার পরে কোথায়, কী ধরনের পরিকল্পনা করা যেতে পারে তার একটি প্রস্তাব জমা দেওয়া হবে কেএমডিএ-র কাছে। সেটি পাঠানো হবে রাজ্যের অর্থ দফতরেও। অর্থ বরাদ্দ হলে দরপত্র ডেকে এবং প্রোমোটারদের সঙ্গে শর্ত সাপেক্ষে আলোচনার পরেই নতুন নকশা অনুযায়ী সেজে উঠবে আবাসন এবং আবাসন-চত্বর।
কেএমডিএ-র আধিকারিকদের অভিযোগ, এই আবাসন এবং বাজারের স্টল থেকে প্রাপ্ত ভাড়ার পরিমাণ কম হওয়ায় সেগুলি দেখভাল করায় সমস্যা হয়। তা ছাড়া, বেশ কিছু ফ্ল্যাট থেকে নিয়মিত ভাড়া পাওয়া যায় না। বিকল্প হিসেবে বাম আমলেই ওই ফ্ল্যাট বিক্রির সিদ্ধান্ত হলেও তা কার্যকরী হয়নি। রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতরের কর্মী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রাণবন্ধু নাগ বলেন, ‘‘ফ্ল্যাট এবং বাজারগুলি কেএমডিএ-র বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপার্জন হয় নামমাত্র, অথচ রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বিপুল। সে কারণেই যৌথ উদ্যোগে এবং আবাসিকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে ওই জায়গাগুলি উন্নত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেটাই এখন বাস্তবায়িত করা হচ্ছে।’’