ফাইল চিত্র।
গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে অবসর নেওয়া পুরকর্মীদের গ্র্যাচুইটি এবং কমিউটেশন বাবদ বকেয়া মোটা টাকা ধাপে ধাপে মিটিয়ে দিতে চায় কলকাতা পুরসভা।
পুরসভা সূত্রের খবর, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত অবসর নিয়েছেন ৯৫৯ জন। তাঁদের গ্র্যাচুইটি ও কমিউটেশন বাবদ পাওনা রয়েছে ১১৮ কোটি টাকা! কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ২ মে পর্যন্ত কর্মীদের একাংশের গ্র্যাচুইটি ও কমিউটেশন বাবদ ২৬ কোটি টাকা মিটিয়ে দিয়েছে পুরসভা। পুরসভার পেনশন দফতর সূত্রের খবর, বাকি ৯২ কোটি টাকার মধ্যে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ১৫ কোটি টাকা দিয়ে দেওয়া হবে।
পুর অর্থ দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘১৫ কোটি টাকা দেওয়ার পরে কমিউটেশন ও গ্র্যাচুইটি বাবদ পরবর্তী বকেয়া ৭৭ কোটি টাকা প্রতি মাসে ধাপে ধাপে দেওয়া হবে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই।’’ পুরসভা অবসরকালীন টাকা মেটানোর আশ্বাস দিলেও চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। কারণ, প্রতি মাসেই এখন অবসর নেওয়া কর্মীর সংখ্যা বাড়ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, গত সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত অবসর নিয়েছেন যথাক্রমে ৭৮, ৭১, ৯৪, ১৯১, ২০০, ১২৫, ১২৫ এবং ৭৫ জন কর্মী। চলতি মাসে ১৫০ জন কর্মী অবসর নেবেন।
কবে বকেয়া টাকা মিলবে, তা জানতে নিত্যদিন পেনশন দফতরে হাজিরা দিচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। পেনশন দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, রোজ একই প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে অসহায় লাগছে। ফেব্রুয়ারিতে পুর আধিকারিকের পদ থেকে অবসর নিয়েছেন সোনারপুরের বাসিন্দা এক ব্যক্তি। তাঁর কথায়, ‘‘গ্র্যাচুইটি এবং কমিউটেশনের টাকা দিয়ে বাড়ি কেনার কথা ছিল। ওই টাকা কবে পাব জানি না।’’ মাস দুয়েক আগে অবসর নেওয়া আর এক পুরকর্মীর কথায়, ‘‘আমি এবং স্ত্রী, দু’জনেই অসুস্থ। অনেক টাকার ওষুধ খেতে হয়। পেনশন বাবদ যা পাই, তাতে সংসার চলে না। মোটা টাকাটাই ভরসা। ওই টাকা এখনও না পাওয়ায় ধার করে সংসার চালাতে হচ্ছে।’’
সম্প্রতি অবসর নেওয়া চিন্তিত কর্মীদের প্রশ্ন, ‘‘গ্র্যাচুইটি এবং কমিউটেশনের টাকা পেতে কত সময় লাগবে? ওই টাকা ঠিক কবে পাব, তা নিয়ে স্পষ্ট কিছু জানালে দুশ্চিন্তা কিছুটা কমত।’’
সমস্যার সমাধানে কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠকের প্রস্তাব, ‘‘মেয়র ও মেয়র পারিষদেরা গাড়ি, তেল ছাড়াও আনুষঙ্গিক যা যা সুবিধা পান, তা বাতিল করে অবিলম্বে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়া হোক।’’ বিজেপি প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীলের কথায়, ‘‘গ্র্যাচুইটি এবং কমিউটেশনের টাকা দ্রুত পরিশোধ না করলে আমরা বড়সড় আন্দোলনে নামব।”