খরচ কমাতে পেট্রোল পাম্প ছেড়ে দিচ্ছে পুরসভা

পুরসভা সূত্রের খবর, গাড়ির তেল কেনার জন্য বছরে খরচ হয় প্রায় ১২ কোটি টাকা।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:০১
Share:

চুরি’ রুখতে নড়ে বসছেন পুরকর্তারা।

কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন দফতরের গাড়িতে তেল ভরাতে বছরে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ হয় পুর প্রশাসনের। অভিযোগ, সেই তেলের একটা অংশ চুরি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছিল দীর্ঘদিন। এ বার সেই ‘চুরি’ রুখতে নড়ে বসছেন পুরকর্তারা।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, গাড়ির তেল কেনার জন্য বছরে খরচ হয় প্রায় ১২ কোটি টাকা। তবে তা শহরের পেট্রোল পাম্পগুলি থেকে কেনা হয় না। পুরসভারই ছ’টি গ্যারাজে রয়েছে পেট্রোল পাম্প। ইন্ডিয়ান অয়েল, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম-সহ একাধিক সংস্থার থেকে ডিজেল, পেট্রোল কিনে ভরা হয় ওই পাম্পগুলিতে। সেখান থেকেই পুরসভার গাড়িগুলিতে তেল ভরা হয়। সম্প্রতি পুর ভবনের এক বৈঠকে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা ওই ছ’টি পাম্প নিজেদের হাতে রাখবেন না। কোনও তেল সংস্থাকে ভাড়া দেবেন।

কেন এই সিদ্ধান্ত?

Advertisement

পুরসভার অন্দরের খবর, প্রথমত, যে পরিমাণ তেল কেনা হয়েছে বলে দেখানো হয়, হিসেব করে দেখা গিয়েছে ওই পরিমাণ তেল পেট্রোল পাম্পেই নেই। ওই ঘাটতিকে ‘লিক’ বলে চালানো হত এত দিন। দ্বিতীয়ত, তেল কেনার জন্য প্রতিবার অগ্রিম টাকা দিতে হয় সংশ্লিষ্ট তেল সংস্থাকে। যদিও তা পাওয়া যায় দু-তিন দিন পরে। তাতে পুরসভার মতো প্রতিষ্ঠানের সমস্যা হয়। কারণ মেয়র, পুর কমিশনার, পদস্থ আধিকারিক এবং মেয়র পারিষদদের প্রত্যেকের জন্য দৈনিক ৬-৮ লিটার তেল বরাদ্দ হয়। আবর্জনার গাড়ি থেকে সব দফতরের গাড়িতে সরবরাহ করা হয় ওই তেল। অথচ প্রায় প্রতি মাসের শেষে হিসেবে গরমিল হচ্ছে বলে অভিযোগ করছিলেন পুর আধিকারিকদের একটা অংশ। এমনও হয়েছে, যে গাড়ির অস্তিত্ব নেই, তেমন গাড়ির জন্যও তেল বরাদ্দ হয়েছে।

এত দিন অভিযোগ জমা পড়লেও স্থায়ী সমাধানের পথে হাঁটেনি পুর প্রশাসন। কলকাতা পুরসভার সেন্ট্রাল স্টোর্সের অধীনে রয়েছে গ্যারাজগুলি। সম্প্রতি ওই দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন মেয়র পারিষদ তারক সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘মেয়র ফিরহাদ হাকিম খরচে লাগাম টানতে নির্দেশ দিয়েছেন। তাই লোকসান বাঁচাতে নিজস্ব পাম্প তুলতে উদ্যোগী হচ্ছে পুরসভা।’’

এক পুর আধিকারিক জানান, বছরে প্রায় ১২ কোটি টাকার মতো তেল কিনতে হয়। যার ৭-৮ শতাংশ নষ্ট হয় ‘লিক’ হওয়ার কারণে। তারকবাবু বলেন, ‘‘ইন্ডিয়ান অয়েল, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়ামের মতো সংস্থাকে বলা হয়েছে গ্যারাজের পাম্পগুলি তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। বছরে যতটা তেল পুরসভার লাগবে, তা তাদের থেকেই নেওয়া হবে। তবে বড় ক্রেতা হিসেবে পুরসভাকে দামে কিছুটা ছাড় দিতে হবে।’’ গ্যারাজের ভিতরে পেট্রোল পাম্পগুলি থাকায় পুরসভাকে তার ভাড়া দিতে হবে। সেই সঙ্গে তেল কেনার টাকা মেটাতে পুরসভাকে এক মাস সময় দিতে হবে। এ জন্য তেল সংস্থাগুলি পুরসভাকে ক্রেডিট নোট দেবে। পাশাপাশি পুরসভা ছাড়াও যে কোনও খদ্দেরকে তাঁরা তেল বিক্রি করতে পারবেন। যেটা এত দিন পারতেন না। তারকবাবু জানান, আগামী সপ্তাহেই ওই দুই তেল সংস্থা তাঁদের মতামত জানাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement