যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।
তাদের দেওয়া জমির উপরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠার কথা প্রচারের পরিকল্পনা করছেন কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে উচ্চ স্তরে একপ্রস্ত আলোচনা হয়েছে। পুরকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, পুরসভা বলতে সাধারণ মানুষ শুধুমাত্র পুর পরিষেবাই বোঝেন। কিন্তু তার বাইরে পুরসভার কাজের বৃহত্তর ব্যাপ্তির কথা, বিশেষত শহরের উল্লেখযোগ্য ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে পুরসভার ওতপ্রোত যোগ সম্পর্কে অনেকেই ওয়াকিবহাল নন। যেমন, পুরসভার দেওয়া জমির উপরেই মেধার অন্যতম উৎকর্ষ কেন্দ্র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গড়ে ওঠার বিষয়টি। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘পুর পরিষেবা সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঠিকই। কিন্তু তা বাদ দিয়েও পুরসভার অন্য ইতিবাচক দিকও শহরবাসীকে জানানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’
শতবর্ষ আগে, ১৯২১ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘পূর্বপুরুষ’ তৎকালীন ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশন, বেঙ্গল’ (এনসিই) বা বঙ্গীয় জাতীয় শিক্ষা পরিষৎকে লিজ়-চুক্তিতে জমি দিয়েছিল কলকাতাপুরসভা। যে চুক্তির মেয়াদ ফুরিয়েছে ২০২০-র ৩০ সেপ্টেম্বর। তবে সেই সময়ে কোভিডের কারণে চুক্তি নবীকরণের পর্বটি আর এগোয়নি। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুরসভাকে লিজ় চুক্তি নবীকরণের জন্য অনুরোধ করেন। তার পরেই দু’পক্ষ এ বিষয়ে সচেষ্ট হয়।
পুর নথি অনুযায়ী, বঙ্গীয় জাতীয় শিক্ষা পরিষৎকে ১০০ বিঘা জমি দানের ব্যাপারে পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ১৯২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর। পয়লা অক্টোবর সেই জমি পরিষৎকে ৯৯ বছরের লিজ় চুক্তিতে হস্তান্তর করে তারা। এর পরে ১৯৩০ সালে আরও ৯২ বিঘা জমি পরিষৎকে দান করে কলকাতা পুরসভা। অর্থাৎ, দু’দফায় মোট ১৯২ বিঘা জমি দেওয়া হয়েছিল পরিষৎকে।
তবে ১৯৪৪ সালে ২০ বিঘা জমি ‘সেন্ট্রাল গ্লাস অ্যান্ড সেরামিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট’কে দিয়ে দেওয়ায় বঙ্গীয় জাতীয় শিক্ষা পরিষৎ তথা বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ জমির মোট পরিমাণ দাঁড়ায় ১৭২ বিঘা। আরও ৯৯ বছরের জন্য এই ১৭২ বিঘা জমির লিজ় চুক্তির নবীকরণের প্রস্তাবে এই সমস্ত বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর। প্রস্তাবটি রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পরে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে।