(বাঁ দিকে) ফিরহাদ হাকিম, তারক সিংহ (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
কলকাতা শহরে জমা জল নিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে কারা ভুল তথ্য দিয়েছিলেন? তা জানতে চেয়ে নিকাশি বিভাগের কাছে তথ্য তলব করলেন মেয়র পরিষদ তারক সিংহ। গত শুক্রবার থেকেই শহরে জমা জল নিয়ে উত্তপ্ত কলকাতা পুরসভার পরিবেশ। ওই দিন ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বৃষ্টির জল জমে থাকা নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ পান মেয়র। অনুষ্ঠান চলাকালীনই শহরবাসীর অভিযোগ পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মেয়র ফিরহাদ। তিনি বলেন, ‘‘আধিকারিকেরা কোনও কাজ করেন না। ঘরে বসে থাকেন। আর এলাকায় এলাকায় জল জমে থাকে। আমাদের মিথ্যে রিপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন।’’ ফিরহাদ আরও বলেছিলেন, ‘‘অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এলাকা না ঘুরে এসেই বলেন কাজ হয়ে গিয়েছে। আমাকে তারকদা (মেয়র পারিষদ তারক সিংহকে এই নামেই ডাকেন তিনি) হোয়াট্সঅ্যাপ করে কোথাও জল জমে নেই বলে জানান। কিন্তু আমি অভিযোগ পাচ্ছি, জল জমে রয়েছে। আধিকারিকেরা কী করছেন?’’ মেয়রের এই বক্তব্যের পর ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করে দেন মেয়র পারিষদ তারক। এর পর মেয়র ফিরহাদের সঙ্গে কথা হয় তারকের। তার পরেই ইস্তফার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন তিনি। ইঙ্গিত দেন নিজের বিভাগ নিকাশির আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার।
পুরসভা সূত্রের খবর, সোমবার কলকাতা পুরসভায় এসে নিকাশি বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন তারক। উল্লেখ্য, দীর্ঘ দিন ধরে এই বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। শহরের জল জমা সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে মেয়রকে কারা ভুল তথ্য দিয়েছিলেন তা তিনি বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন বলে পুরসভা সূত্রে খবর। আগামী বুধবারের মধ্যে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর জানাতে বলা হয়েছে। মূলত তিনি জবাব চেয়েছেন নিকাশি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিজি শান্তনু ঘোষের কাছে। প্রসঙ্গত, মোমিনপুর এবং খিদিরপুর এলাকায় জমা জল নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মেয়র। সূত্রের খবর তারক রিপোর্টে জানতে চেয়েছেন মোমিনপুরে জল জমেনি, এমন ভুল তথ্য মেয়রের টেবিলে কারা জমা দিয়েছিলেন? কলকাতা বন্দর এলাকায় নবাব আলি পার্কে যে পাম্পিং স্টেশনটি তৈরি হচ্ছে, সেই কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে এমন তথ্যই বা কারা মেয়রকে জানিয়েছিলেন? তা-ও বিস্তারিত ভাবে জানাতে বলেছেন তারক।
কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের বিরুদ্ধে যে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছেন তারক, তার ইঙ্গিত তিনি শনিবারেই দিয়েছিলেন। সোমবার সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করেছেন। কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, সন্তোষজনক উত্তর না পেলে মেয়র পারিষদ (নিকাশি) যে কড়া ব্যবস্থা নেবেন, সে বিষয়েও ইতিমধ্যে বিভাগের আধিকারিকদের জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। যে হেতু বর্ষার মরশুমে জমা জলের অভিযোগ যাতে কোনও ভাবেই না আসে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশ ছিল মেয়রের। তা সত্ত্বেও পুরসভার কোন আধিকারিকেরা দায়সারা কাজ করেছেন, তা জানতেই আগ্রহী মেয়র পারিষদ তারক।