—প্রতীকী চিত্র।
গার্ডেনরিচ-মেটিয়াবুরুজ এলাকায় চলতি বছরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েছে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ। অন্য বছরে ১৫ নম্বর বরো এলাকা, অর্থাৎ গার্ডেনরিচ-মেটিয়াবুরুজে ডেঙ্গির প্রকোপ তেমন থাকে না। কিন্তু চলতি বছরে পুরসভার ১৩৩ থেকে ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডে মশাবাহিত এই রোগের দাপট বেড়েছে। বিশেষত ১৩৫, ১৩৬ এবং ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডে মাত্রাতিরিক্ত হারে ডেঙ্গি সংক্রমণ বাড়ায় গত রবিবার ১৫ নম্বর বরো অফিসে গিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকেরা।
গার্ডেনরিচ এলাকায় ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতার প্রচারে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি বিভিন্ন মসজিদের ইমামদেরও কাজে লাগানো হচ্ছে। ১৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি মোস্তাক আহমেদের কথায়, ‘‘মশাবাহিত রোগ থেকে বাঁচতে মসজিদের ইমামরাও এলাকায় প্রচার চালাচ্ছেন। তাঁরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে নাগরিকদের সচেতন করছেন। জল জমতে না দেওয়ার আবেদন জানানোর পাশাপাশি এলাকা পরিষ্কার রাখতে নমাজের শেষে তাঁরা মানুষকে বোঝাচ্ছেন।’’
কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ১৫ নম্বর বরো এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। যার মধ্যে ১৩৫, ১৩৬ ও ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ২০০, ১৭০ এবং ২৫০। শুধু অক্টোবর মাসেই ওই বরোয় ৩১০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। উপরোক্ত তিনটি ওয়ার্ডে অক্টোবরে সংক্রমিত হয়েছেন যথাক্রমে ৮০, ৪০ এবং ৪৫ জন। তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও ওই এলাকায় ডেঙ্গি সংক্রমণের হার বাড়তে থাকায় চিন্তায় পুর প্রশাসন।
পুরসভা সূত্রের খবর, ওই এলাকায় পুরসভার স্বাস্থ্য পরিষেবা থাকলেও স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকেই হাতুড়ে ডাক্তারদের উপরে বেশি ভরসা করেন। বিভিন্ন সংস্কারবশত ওষুধ খেতেও অনীহা রয়েছে অনেকের। অতীতে গার্ডেনরিচ এলাকায় পোলিওর টিকা নিতেও বিভিন্ন সংস্কার হেতু অনীহা দেখা গিয়েছিল। এর জন্য পুরসভা সব শিশুকে পোলিও টিকার আওতায় আনতে এলাকার মসজিদের ইমামদের কাজে লাগিয়েছিল। একই ভাবে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ ঠেকাতেও পুরসভা তাঁদের কাজে লাগাচ্ছে।
গার্ডেনরিচ সংলগ্ন মহেশতলা ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর কাজিরডাঙা জামে মসজিদের ইমাম উমায়ের আহম্মদ বুখারী বলেন, ‘‘ডেঙ্গি সচেতনতায় এলাকার বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে আমরা মশাবাহিত রোগ দূরীকরণে সাধারণ মানুষকে সচেতন করছি।’’ পুরসভার ১৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের একটি মসজিদের ইমাম আবদুর রহমান সালাফি বলেন, ‘‘এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ায় নমাজের শেষে মানুষকে সচেতন হতে আবেদন করছি। ডেঙ্গি দূরীকরণে প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদের সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে।’’