জোরকদমে: চলছে পাইপলাইনের কাজ। শনিবার, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে। নিজস্ব চিত্র
মধ্য কলকাতার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গে ‘ভেন্টিলেশন শ্যাফ্ট’ তৈরির জন্য বাদ দিতে হল ১০০ ফুটেরও বেশি লম্বা পানীয় জলের পাইপ। ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের ওই পাইপ বাদ দেওয়ার কাজ করার জন্য শনিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত জল সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছিল টালা ও জোড়াবাগান জলাধার থেকে। যার জেরে গোটা মধ্য ও উত্তর কলকাতা, দক্ষিণ কলকাতার ১৭টি ওয়ার্ড এবং সল্টলেক ও দক্ষিণ দমদমে দুপুরের পর থেকে পানীয় জল সরবরাহ হয়নি। ওই খবর আগাম জানতে না পারায় বহু মানুষ পানীয় জল নিয়ে সমস্যায় পড়েন। তবে সন্ধ্যায় কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন এলাকায় গাড়ি পাঠিয়ে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়েছে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, মেট্রোর কাজের জন্য শনিবার জল বন্ধ রাখা জরুরি ছিল। আজ, রবিবার সকাল থেকে পানীয় জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রের খবর, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে ভেন্ট শ্যাফ্ট সংলগ্ন এলাকায় পাইপলাইন সরানোর কাজ মূলত পুরসভা করলেও শনিবার দিনভর ‘কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড’ (কেএমআরসিএল)-এর আধিকারিকেরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। যে কোনও প্রয়োজনে প্রযুক্তিগত সাহায্য করার জন্য কেএমআরসিএল প্রস্তুত ছিল। সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পুরসভার সঙ্গে আমরা আগাগোড়া সমন্বয় রক্ষা করে চলেছি।’’
এ দিন সন্ধ্যায় পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জানান, বাদ পড়া ৩৬ ইঞ্চির পাইপলাইনের পাশে সমান্তরাল আরও একটি পাইপলাইন আগে থেকেই ছিল। এ দিন সেই পাইপের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে জল সরবরাহের লাইন। তার ফলে রাতের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে এবং টালা জলাধার থেকে জল ছাড়াও শুরু করা হবে। তবে শনি ও রবিবার সাধারণত অন্য দিনের থেকে একটু বেশি জলের প্রয়োজন হয়। তাই এ দিন সকালের পর থেকে জল বন্ধ থাকায় পুরসভার ৩, ৫, ৬ এবং ৭ নম্বর বরোর অন্তর্গত বেশির ভাগ জায়গাতেই বাসিন্দারা জল জোগাড়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ১০টার পর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রায় ৪০০ ট্যাঙ্কার জল বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪০ ট্যাঙ্কার পানীয় জল মধ্য ও পূর্ব কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে সকালেই পাঠানো হয়। বেলার দিকে আরও ১৬০টি গাড়ি পাঠানো হয় বলে পুরসভার দাবি। মধ্য কলকাতার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমেও পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। বেশি জল পাঠানো হয় তপসিয়া, তিলজলা, বালিগঞ্জ ফাঁড়ি ও বেলেঘাটা অঞ্চলে। সন্ধ্যার পরে বিভিন্ন জলাধারে জলের পরিমাণ কমে যাওয়ায় গাড়িতে জল পাঠানোও কমে আসে। তবে গার্ডেনরিচের জলাধার থেকে সরবরাহ ঠিক থাকায় দক্ষিণ কলকাতার অনেকটা অংশে সমস্যা হয়নি।
এ দিন সকাল সাড়ে ৯টার পরে টালা থেকে সল্টলেকের জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, শনি ও রবিবার সল্টলেকের বাসিন্দাদের জল সরবরাহ করার জন্য জল সরবরাহ বিভাগ পাম্প চালিয়ে ১৫টি জলাধারে জল তুলে রাখে। ওই বিভাগের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার স্বপন মৈত্র বলেন, ‘‘সল্টলেকে রোজ ১ কোটি ১৫ লক্ষ গ্যালন জল লাগে। ৭৫ লক্ষ গ্যালন জল দেয় টালা। বাকি জলটা মেলে নিউ টাউনের জলাধার থেকে।’’