KMC Heritage

বেহালার আড়াইশো বছরের শিবমন্দিরকে হেরিটেজের তকমা দিল কলকাতা পুরসভা

১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের এই মন্দিরের ভৌগোলিক অবস্থানের কথা বেহালাবাসীদের অজানা নয়। অথচ এই মন্দিরের ঐতিহ্যের কথা জানেন না বেশিরভাগ এলাকাবাসী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:৩৯
Share:

বেহালার আড়াইশো বছরের শিবমন্দিরকে কলকাতা পুরসভার তরফে হেরিটেজ তকমা প্রদান। —নিজস্ব চিত্র।

বেহালায় আড়াইশো বছরের পুরোনা চারচালা একটি শিবমন্দিরকে হেরিটেজ তকমা দিল কলকাতা পুরসভা। শুক্রবার কলকাতা পুরসভার হেরিটেজ বিভাগের ঘোষণার কথা জানতে পারেন এলাকাবাসী। বেহালা ১৪ নম্বর বাস স্ট্যান্ডের বিপরীতের আর্য সমিতির গলিতে আড়াইশো বছরের শিবমন্দির রয়েছে। সেই মন্দিরটিকেই বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। শুক্রবার কলকাতা পুরসভার তরফে চারচালা শিবমন্দিরে ঐতিহ্যের স্মারকফলক লাগানো হয়েছে।

Advertisement

১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের এই মন্দিরের ভৌগোলিক অবস্থানের কথা বেহালাবাসীর অজানা নয়। অথচ এই মন্দিরের ঐতিহ্যের কথা জানেন না বেশিরভাগ এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, বর্তমানে যেখানে দেবদারু ফটক ক্লাবের খেলার মাঠ রয়েছে, সেখানে ৩০০ বছর আগে একটি পুকুর ছিল। সেই পুকুর থেকেই ওই শিবলিঙ্গটি পাওয়া গিয়েছিল। ওই পুকুরটি ছিল এলাকার সম্পন্ন হালদার পরিবারের। সেই শিবলিঙ্গটি তুলে আনার পর পুকুরের পাশে ছোট মন্দির তৈরি করেই ওই শিবলিঙ্গের পুজো অর্চনা শুরু হয়। কিন্তু কালক্রমে মন্দিরটি ভগ্নদশায় পরিণত তা নজরে আসে হালদার পরিবারের। পাঁচের দশকে নতুন করে মন্দির তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় হালদার পরিবার। মন্দিরের বর্তমান চেহারা পায় সেই সময়েই। বর্তমানে বাংলার সিনেমার নায়ক সোহম চক্রবর্তীর ঠাকুরদা সুশীল চক্রবর্তীকে সেবায়েত নিয়ে করা হয়। ৬০-এর দশকে হালদার পরিবারের সদস্য অলোক হালদারদের তত্ত্ববধানে এই নির্মাণকারী সংস্থাকে দিয়ে মন্দিরটি নতুন করে তৈরি হয়। সেই থেকে ওই মন্দিরটি এলাকাবাসীর কাছে হয়ে উঠেছে অন্যতম উপাসনা স্থল।

১৯৭৩ সালে মন্দির দেখভালের দায়িত্ব হালদাররা তুলে দেন স্থানীয় ক্লাব দেবদারু ফটকের হাতে। সেই থেকে এই মন্দিরের দেখাশোনার দায়িত্বে ক্লাব সংগঠনটি। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের ঐতিহ্যের খোঁজ করতে নেমেই এই মন্দিরটির সন্ধান পান আধিকারিকেরা। তারপর সমীক্ষা ও স্থানীয়দের থেকে সত্যতা যাচাই করে মন্দিরটিকে ‘গ্রেড ওয়ান কলকাতা হেরিটেজ’ ঘোষণা করেছে।

Advertisement

প্রতি বছর ১২ ডিসেম্বর ওই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্‌যাপন করা হয়। আগামী বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্‌যাপিত হবে। তার আগেই কলকাতা পুরসভার তরফে এই মন্দিরটিকে কলকাতার অন্যতম ঐহিত্যের তালিকায় স্থান দেওয়া হল। শিবরাত্রি এবং নীল ষষ্ঠীর দিনেও এই মন্দির ঘিরে উৎসবের আয়োজন হয়।

হালদার পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম অরিজিৎ হালদার স্থানীয় ক্লাব দেবদারু ফটকের সঙ্গেও যুক্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পরিবারের মন্দিরটি দেখাশোনার দায়িত্ব ক্লাবের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমার এবং আমাদের ক্লাবের সব সদস্যের কাছে এই পুরস্কার বিরাট সম্মান এবং গর্বের। চারচালা শিবমন্দিরকে হালদার পরিবার বা দেবদারু ফটক ক্লাবের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখাটা উচিত নয়। সমস্ত এলাকাবাসী এই মন্দির তাঁর ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement