মেয়রকে ঘিরে বিক্ষোভ চলছে।— নিজস্ব চিত্র।
বাজেট পেশের দিনে ধুন্ধুমার বেঁধে গেল কলকাতা পুরসভায়। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মেয়রকে শনিবার বাজেট পেশ করতে বাধা দিলেন বিরোধী দলের কাউন্সিলররা। প্ল্যাকার্ড হাতে ওয়েলে নেমে চেয়ারপার্সনের সামনে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন তাঁরা। হাতাহাতি শুরু হয়ে যায় তৃণমূল কাউন্সিলরদের সঙ্গে। পরিস্থিতি এতটাই হাতের বাইরে চলে যায় যে, মাত্র ১০ মিনিটে কোনওক্রমে বাজেট বক্তব্য শেষ করেই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যান মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। এই ঘটনায় বিরোধী দলের কয়েক জন কাউন্সিলর জখম হয়েছেন বলে বিরোধীদের অভিযোগ।
ঠিক কী ঘটেছিল?
আরও পড়ুন: তিনি ও তাঁর দল আক্রান্ত, নারদে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ জেনে বার্তা মমতার
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, শনিবার কলকাতা পুরসভার বাজেট পেশ হওয়ার কথা ছিল। দুপুর ১টা নাগাদ চেয়ারপার্সন মালা রায় বাজেট অধিবেশন শুরু করেন। বেলা ১টা ১০ মিনিট নাগাদ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বাজেট পাঠ করতে উঠলেই ঝামেলা শুরু হয়ে যায়। বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসের সমস্ত কাউন্সিলররা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। মেয়রকে বাজেট পেশ করতে বাধা দেন তাঁরা। প্ল্যাকার্ড হাতে বলতে থাকেন, নারদ কাণ্ডে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মেয়র। হাইকোর্ট সিবিআইকে তদন্তভার দিয়েছে। এমন এক দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে দিয়ে বাজেট পেশ করানো যাবে না।
বিরোধীদের বিক্ষোভে অবশ্য আমল দেননি মেয়র। এই বিক্ষোভের মধ্যেই বাজেট পাঠ করতে শুরু করে দেন। মেয়র বাজেট পেশ করছেন দেখে বিরোধী কাউন্সিলররা ওয়েলে নেমে পড়েন। এগিয়ে আসেন তৃণমূল কাউন্সিলররাও। বিরোধীদের ঘিরে ফেলেন তাঁরা। আর তার পরেই বিরোধী এবং শাসকদলের কাউন্সিলরদের মধ্যে ধস্তাধ্বস্তি শুরু হয়ে যায়। ধস্তাধ্বস্তি হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে পুরসভার ওই কক্ষ ছেড়ে নিজের ঘরে চলে যান মেয়র। তাঁকে ধাওয়া করে সেখানেও পৌঁছে যান বিরোধী কাউন্সিলররা। মেয়রের ঘরের বাইরে ফের বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা।
বিরোধীদের আরও অভিযোগ, বাজেট পেশ করার আগে বিরোধী কাউন্সিলরদের বাজেটের একটি করে প্রতিলিপি দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু এ দিন মেয়র কাউকেই এই প্রতিলিপি না দিয়ে বাজেট পাঠ করতে শুরু করে দেন। এই ঘটনার পর মেয়র বলেন, ‘‘নারদ কাণ্ডের পরেই মানুষের ভোটে আমরা ফের ক্ষমতায় এসেছি। আমাদের উপর আমজনতার ভরসা আছে। তাই বিরোধীরা কী বলছে তাতে কিছু এসে যায় না।’’