অবহেলা: দেশপ্রিয় পার্কে পড়ে সেই অব্যবহৃত কিয়স্ক। নিজস্ব চিত্র
নীল-সাদা বড় চৌকো বাক্সের মতো। গড়িয়াহাটের রাস্তার ধারে এবং দেশপ্রিয় পার্কের ভিতরে ইতিউতি রাখা রয়েছে চাকা লাগানো সেই সব বাক্স সদৃশ কিয়স্ক। তার কয়েকটির গা বেয়ে নেমে গিয়েছে আগাছার জঙ্গল। গড়িয়াহাটের হকারদের কথা ভেবে কলকাতা পুরসভার উদ্যোগে তৈরি কিয়স্কগুলি এমনই অবস্থায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ। কারণ, আগেই কিয়স্কগুলি ব্যবহারে আপত্তি জানিয়েছিলেন হকারদের বেশির ভাগ। ফলে সেগুলি তৈরির পরেও অব্যবহৃত হয়ে পড়ে। খরচ করে তৈরি কিয়স্কগুলির ভবিষ্যৎ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।
গড়িয়াহাটের বহুতলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছিল বছর খানেক আগে। এর পরেই পুর কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছিলেন, প্লাস্টিকের ছাউনির নীচে বসে নয়, কিয়স্কে বসেই হকারদের ব্যবসা করতে হবে। এ-ও বলা হয়েছিল, পুরসভাই হকারদের সেই সব কিয়স্ক তৈরি করে দেবে। পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, গড়িয়াহাটের আগুন ছড়ানোর অন্যতম কারণ হিসেবে ফুটপাতের প্লাস্টিককে দায়ী করেছিল দমকল। জিনিস বাঁচাতে হকারদের ভরসা প্লাস্টিক, সে সব সরিয়ে ছোট কিয়স্ক তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
গড়িয়াহাট অঞ্চলের হকারদের একটি অংশের দাবি, পুর প্রশাসন যে কিয়স্কগুলি দিতে চেয়েছিল সেগুলি আকারে যথেষ্ট ছোট। সেই কারণে তাঁরা নিতে চাননি। পুরনো নকশা বদলে নতুন কিয়স্ক তৈরির জন্যে পুর কর্তৃপক্ষকে আবেদন জানিয়েছেন হকারদের একটি অংশ। হকার সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক শক্তিমান ঘোষ বলেন, ‘‘প্লাস্টিকের পরিবর্তে আমরা কিয়স্ক চাই ঠিক-ই। খাবারের স্টল হিসেবে এই কিয়স্ক ঠিক আছে। কিন্তু কাপড়-সহ বিভিন্ন জিনিস রাখতে বড় কিয়স্ক দরকার। মেয়রকে সেটা জানিয়েছি। কী ধরনের কিয়স্ক প্রয়োজন, সে ব্যাপারে পুরসভা আমাদের থেকে নকশা চেয়েছে। দ্রুত সেটা জমা দেব।’’
পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার জানান, প্রাথমিক ভাবে গড়িয়াহাটের হকারদের কিয়স্ক দেওয়ার কথা ওই পাইলট প্রকল্পে ভাবা হয়েছিল। সে জন্য ৫০টির মতো এক মাপের এবং একই রকম দেখতে কিয়স্কগুলি তৈরি হয়েছিল। আলাদা আলাদা ব্যবসার জন্যে ভিন্ন মাপের স্টল তৈরি সম্ভব নয়। দেবাশিসবাবুর কথায়, ‘‘হকার সংগঠনের প্রতিনিধি ছাড়াও সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেই হকারদের নতুন কিয়স্ক বিতরণ করবে পুরসভা।’’