প্রতীকী ছবি।
দু’বছর আগে রক্তদান শিবিরের জন্য চাঁদা তুলেছিল শ্রমিক সংগঠন। অভিযোগ, হয়নি সেই অনুষ্ঠান। শেষে শ্রমিক অসন্তোষ আটকাতে ও উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে শনিবার সকালে সেই টাকা ফেরত দিলেন চটকল কর্তৃপক্ষ।
চটকলের জেনারেল ম্যানেজার সরোজ ঝাঁ এ দিন বলেন, ‘‘বিষয়টি সংগঠনের। কর্তৃপক্ষ যুক্ত নন। কিন্তু চটকল শান্তিপূর্ণ রাখতে আমরা সকলে মিলে টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করেছি।’’
অভিযোগ, ২০১৭ সালে চটকলের তৃণমূল পরিচালিত শ্রমিক সংগঠনের তরফে প্রায় ১২০০ শ্রমিকের থেকে মাথা পিছু ১০০-১২৫ টাকা নেওয়া হয়েছিল। চাঁদা উঠেছিল প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। এক শ্রমিক মন্টু গিরি বলেন, ‘‘রক্তদান শিবিরের জন্য টাকা তোলা হলেও কিছু না হওয়ায় আন্দোলন শুরু করি।’’ বিষয়টি জানতে পেরে চটকলে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্থানীয় বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। তিনি চটকল কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে সমস্যা মেটানোর জন্যও নির্দেশ দেন।
বিধায়ক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে কোথাও অরাজকতা চলবে না। এলাকার কিছু লোকজন তোলাবাজি করেছিলেন। কিন্তু শ্রমিকদের উপরে অত্যাচার চলবে না। তাঁরা যাতে টাকা ফেরত পান তার জন্য চটকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তাঁরাও সহযোগিতা করেছেন।’’
চটকল সূত্রের খবর, রাজ্য জুড়ে কাটমানি ফেরতের বিষয়টি শুরু হতেই শ্রমিকেরা আন্দোলনে নামেন। তাঁরা দাবি তোলেন, রক্তদান শিবিরের নামে সংগঠনের সভাপতি তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর বলরাম ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক কাশীনাথ মাইতি যে টাকা তুলেছেন তা ফিরিয়ে দিতে হবে। সরোজবাবুর অভিযোগ, ‘‘বারবার বলরামবাবু ও কাশীনাথবাবুকে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে অনুরোধ করলেও তাঁরা শোনেননি। দাবি করেন, চাঁদা হিসেবে ওই টাকা তোলা হয়েছিল। কিন্তু সংগঠনের সদস্যেরা জানান, রক্তদান শিবিরের জন্য টাকা তোলা হয়েছিল।’’
শ্রমিক অসন্তোষ মেটাতে বালি থানাতেও বৈঠক করেছিলেন সরোজবাবুরা। সেখানেও সংগঠনের ওই দুই নেতা আসেননি বলে অভিযোগ। সরোজবাবু জানান, বিধায়কের সঙ্গে আলোচনার পরে সংগঠনের সদস্যদের অনুরোধ করা হয়, কিছু টাকা দিতে। চটকল কর্তৃপক্ষও কিছু টাকা দেন। সে সব মিলিয়েই টাকা ফেরতের ব্যবস্থা হয়। অভিযোগ অস্বীকার করে বলরামবাবুর দাবি, ‘‘সংগঠনের জন্য ওই একবারই চাঁদা তোলা হয়েছিল। কাশীনাথই সব কিছু দেখাশোনা করতেন। তবে বিধায়ক বিষয়টি নিয়ে এক বার আমার সঙ্গে আলোচনা করতে পারতেন। কে, কী ভাবে টাকা ফেরত দিলেন তা জানি না।’’