ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চ। অনশনকারীদের শারীরিক অবস্থার রিপোর্ট লেখা চলছে। —ফাইল চিত্র।
রবিবার ধর্মতলায় ‘চিৎকার সমাবেশের’ ডাক দিলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা। সাধারণ মানুষকে অনশনমঞ্চের সামনে জমায়েতের আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। রবিবার বিকেল ৪টে থেকে এই সমাবেশ শুরু হবে। শনিবার ধর্মতলার অনশনমঞ্চে গিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের মতো রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। তাঁদের মাধ্যমে অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর ডাক্তারদের মুখ্যসচিব ইমেল করে জানিয়েছেন, সোমবার বিকেল ৫টায় নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। তবে তার আগে অনশন তুলে নিতে হবে। এই ইমেলের জবাবে জুনিয়র ডাক্তারেরা রবিবার কী বলেন, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে। তার মাঝেই নতুন কর্মসূচির আয়োজন করা হল ধর্মতলায়।
পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের তরফে সমাজমাধ্যমে ‘চিৎকার সমাবেশ’-এর ডাক দেওয়া হয়েছে। তাঁরা লিখেছেন, ‘‘আমাদের দাবির আওয়াজ ছড়িয়ে পড়ুক চিৎকার হয়ে। দেখা হচ্ছে বিকেল ৪টেয়, ধর্মতলার অনশনমঞ্চে।’’ রবিবার কর্মসূচির কথা আগেই জানিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তবে সেই কর্মসূচির নির্দিষ্ট কোনও নাম আগে জানানো হয়নি। শুক্রবার অনশনমঞ্চ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন স্নিগ্ধা হাজরা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, রুমেলিকা কুমারের মতো অনশনকারীরা। সে দিনই তাঁরা বলেছিলেন, ‘‘রবিবার আপনারা এখানে আসুন। আমাদের পাশে একটু দাঁড়ান। আমাদের আশীর্বাদ করুন। আমরা না খেয়ে আছি। আমাদের কণ্ঠ দুর্বল হয়ে পড়েছে। আপনাদের কণ্ঠেই আমরা শক্তি পাব।’’ তার পর রবিবার সকালে ‘চিৎকার সমাবেশ’-এর ঘোষণা করা হল।
শুক্রবার জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল, সোমবারের মধ্যে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে দাবিপূরণ না করলে মঙ্গলবার তাঁরা রাজ্য জুড়ে সর্বাত্মক চিকিৎসক ধর্মঘটের পথে হাঁটবেন। জুনিয়র, সিনিয়র সমস্ত ডাক্তার সেই ধর্মঘটে অংশ নেবেন। বাদ যাবে না বেসরকারি হাসপাতালগুলিও। সে দিন কোনও রোগীর কিছু হলে তার দায় হবে সরকারের। এর পরেই শনিবার ধর্মতলায় পৌঁছন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিবেরা। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের ফোনে কথা বলিয়ে দেন। ফোনেই ডাক্তারদের ১০ দফা দাবি এক এক করে শোনেন মমতা। দাবি ধরে ধরে জবাব দেন। কিছু দাবি মেটানোর জন্য তিন-চার মাস সময় লাগবে বলেও জানান তিনি। জুনিয়র ডাক্তারদের অনুরোধ করেন, অনশন তুলে নিয়ে কাজে ফিরতে। সোমবার বিকেল ৫টায় তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলেও ফোনেই জানিয়েছিলেন মমতা। পরে মুখ্যসচিব ইমেলে জানান, অনশন তুলে নেওয়া হলেই সোমবারের বৈঠক হবে। না হলে নয়।
সোমবার জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ জন প্রতিনিধিকে নবান্নে ডাকা হয়েছে। ৪৫ মিনিট সময় তাঁদের দিতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী। সাড়ে ৪টের মধ্যেই নবান্নে তাঁদের পৌঁছে যেতে বলা হয়েছে। প্রতিনিধিদের নাম ইমেল করে জানাতেও বলা হয়েছে। এ বিষয়ে রাত পর্যন্ত নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। এখনও তাঁদের তরফে কিছু জানানো হয়নি। যদিও, সোমবারের বৈঠকে যাবেন, আগেই জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।