পূর্বাঞ্চলের স্বাস্থ্য-শিক্ষা কেন্দ্রের স্বীকৃতি পেল জোকার ইএসআই হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত।
কয়েকটি বিষয়ে প্রশ্ন ছিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (এনএমসি)। অভিযোগ, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তর জমা পড়েনি। তাই কল্যাণীর জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ থেকে পূর্বাঞ্চলের স্বাস্থ্য-শিক্ষা কেন্দ্রের স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নেয় এনএমসি। এ বার সেই স্বীকৃতি তুলে দেওয়া হচ্ছে রাজ্যেরই একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ, জোকার ইএসআই হাসপাতালকে। তবে, সেটি কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত।
সোমবার ওই হাসপাতালে ‘মেডিক্যাল এডুকেশন ইউনিট’ (এমইইউ) গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে এনএমসি। যা কল্যাণীর জেএনএমে হওয়ার কথা ছিল। চিকিৎসকদের বড় অংশের আক্ষেপ, বঙ্গের শিক্ষক-চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য-শিক্ষা বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে অন্য রাজ্যের উপরে নির্ভর করতে হয়। সেখানে এ রাজ্যেরই সরকারি মেডিক্যাল কলেজ সেই সুবিধা পেয়েও হারাল। কিন্তু, কল্যাণীর বদলে রাজ্যের অন্য মেডিক্যাল কলেজকে সেই সুযোগ না দিয়ে, কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল কলেজকেই কেন বেছে নেওয়া হল? এনএমসি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ওই স্বীকৃতি পাওয়ার সব মাপকাঠি অন্য মেডিক্যাল কলেজ পূরণ করতে পারছে না।
সূত্রের খবর, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে ‘এমইইউ’ গড়ে তোলার সম্মতিপত্র বা ‘লেটার অব অ্যাকসেপ্টেন্স’ পাঠায় এনএমসি। সেখানে বলা হয়েছিল, অন্তত চার বছর ওই ইউনিটের আহ্বায়ককে সরানো যাবে না। যদিও পরবর্তী সময়ে জেএনএম হাসপাতালে ওই পদে পরিবর্তন করা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে কারণ জানতে চেয়ে গত ১ মার্চ চিঠি পাঠায় এনএমসি। পরে তাদের তরফে দাবি করা হয়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চিঠির উত্তর দেয়নি জেএনএম হাসপাতাল। তাই, গত ১৩ মার্চ কল্যাণীর স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নেয় এনএমসি। রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুহৃতা পাল বলেন, “এনএমসি-র কিছু প্রশ্ন ছিল। যার উত্তর ৮ মার্চের মধ্যে দিতে বলা হয়েছিল। ৬ মার্চ দুপুরেই সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি-সহ ইমেল এবং চিঠির মাধ্যমে উত্তর পাঠানো হয়। উত্তর পৌঁছনোর প্রমাণও রয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক, প্রত্যুত্তর মেলেনি।”
স্বাস্থ্য মহলে জল্পনা ছিল, কোন হাসপাতাল পাবে স্বীকৃতি? সোমবার জোকার ইএসআই হাসপাতালে এনএমসি-র চিঠি আসার পরে অবশ্য বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। সেখানকার অধ্যক্ষ সঞ্জয় কেশকর জানান, গত ৩১ মার্চ এনএমসি-র পরিদর্শকেরা এসে হাসপাতালের সব কিছু খতিয়ে দেখেন। তার পরে সোমবার চিঠি পাঠানো হয়। আজ, বুধবারের মধ্যে ওই প্রস্তাবের উত্তরও দিতে বলেছে এনএমসি। তাতে প্রস্তাবিত এমইইউ-র আহ্বায়ক, সহ-আহ্বায়ক এবং রিসোর্স ফ্যাকাল্টিদের তালিকাও দিতে বলা হয়েছে। ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, “রাজ্যে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ২৩টি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। তাই এখানে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের এমন কেন্দ্র গড়ে উঠলে খুবই ভাল। জেএনএমের সেই সুযোগ ছিল। কিন্তু সরকারি নিষ্ক্রিয়তায় রাজ্য সরকারি মেডিক্যাল কলেজ সেই সুযোগ হারাল। তবে, কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল কলেজ হলেও জোকায় ওই কেন্দ্র গড়ে উঠলে খুশিই হব।’’