—প্রতীকী ছবি।
আজ, শুক্রবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এসপ্লানেড থেকে হাওড়ার মধ্যে পরিষেবা খুলে দেওয়া হচ্ছে জনসাধারণের জন্য। এই পথে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাই ওই মেট্রোপথের চারটি স্টেশনের জন্য প্রায় ৮০ জন কর্মী নিয়োগ করতে হয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে। বস্তুত, ইস্ট-ওয়েস্টের পূর্ব প্রান্তে সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ৮টি স্টেশনে যত কর্মী রয়েছেন, তার থেকে অনেক বেশি সংখ্যায় কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে ওই মেট্রোপথের পশ্চিমের চারটি স্টেশনে। আর তাঁদের একটা বড় অংশকেই উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর বিভিন্ন স্টেশন থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে খবর। চাহিদার তুলনায় মেট্রোয় নতুন কর্মী নিয়োগের সংখ্যা নেহাতই কম। তাই এ বার সব ক’টি মেট্রো রুটে সীমিত সংখ্যক কর্মীকেই বিপুল কাজের চাপ সামলাতে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পরিস্থিতি এমনই যে, উত্তর-দক্ষিণ এবং ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর মতো গুরুত্বপূর্ণ মেট্রোপথে কর্মী নিয়োগ করে পরিস্থিতি সামলানোর কথা ভাবতে গিয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলিতে সে ভাবে নতুন কর্মীর ব্যবস্থাই করা যায়নি বলে অভিযোগ। ফলে, নিউ গড়িয়া-রুবি এবং জোকা-মাঝেরহাট শাখায় পরিষেবা এক প্রকার বাধ্য হয়েই সীমিত রাখতে হয়েছে।
জোকা মেট্রো তারাতলার পরিবর্তে মাঝেরহাট পর্যন্ত সম্প্রসারিত হওয়ার পরে ওই পথে যাত্রী-সংখ্যা কিছুটা বাড়বে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মীর অভাবে ওই মেট্রোপথে পরিষেবার সময় এমন ভাবে কমিয়ে আনতে হয়েছে যে, তা আদৌ যাত্রীদের কতটা কাজে আসবে, সেই প্রশ্ন উঠছে। মেট্রো সূত্রের খবর, ওই রুটে পরিষেবা চালু থাকবে সকাল সাড়ে আটটা থেকে দুপুর ৩টে ৩৫ মিনিট পর্যন্ত। নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রোপথও কবি সুভাষ স্টেশনের মাধ্যমে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ায় সেই রুটেও যাত্রীদের সফর করার সম্ভাবনা বেড়েছে। সে কথা মাথায় রেখে ওই মেট্রোয় ২০ মিনিটের ব্যবধানে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আপ-ডাউন মিলিয়ে মোট ৪৮টি ট্রেন চলবে। তবে ওই রুটেও সন্ধ্যার আগেই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীরা কতটা লাভবান হবেন, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় এসপ্লানেড থেকে হাওড়া ময়দান পথে সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে আপ-ডাউন মিলে ১৩০টি ট্রেন চলবে। ওই মেট্রোয় দু’টি লাইনেই একটি করে মোট দু’টি রেক ‘ওয়ান ট্রেন ওনলি’ ব্যবস্থায় পরিষেবা দেবে। ওই পথে হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্লানেডের মধ্যে কোথাও ট্রেনের অভিমুখ বদল করার জন্য ক্রসওভার ব্যবহার করা হবে না।
ফলে মেট্রোর দু’টি রেক পর্যায়ক্রমে আপ ও ডাউন ট্রেন হিসাবে একই লাইন দিয়ে যাওয়া-আসা করবে। এই ব্যবস্থা নিয়েও যাত্রীদের একাংশের মধ্যে সংশয় তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসপ্লানেড থেকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত মোট চারটি স্টেশন রয়েছে। তাদের মধ্যে হাওড়া ময়দান, হাওড়া এবং এসপ্লানেড স্টেশনে ডবল ডিসচার্জ প্ল্যাটফর্ম রয়েছে।
নির্বাচনের মুখে যে ভাবে তিনটি পথে একসঙ্গে মেট্রো পরিষেবা খুলে দেওয়া হচ্ছে, তা না করে গুরুত্ব দিয়ে ইস্ট-ওয়েস্টের পরিষেবা শুরু করলে অনেক সুষ্ঠু ভাবে তা দেওয়া সম্ভব হত বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। জোকা এবং নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রোয় আংশিক পরিষেবার কারণে মেট্রোর আর্থিক ক্ষতি বৃদ্ধিরও আশঙ্কা থাকছে।