ফাইল চিত্র।
‘বারকা দা রানার ইয়ারেন উয়া না দুনিয়া’!
ইংরেজিতে এই বাক্যটাই ফোনে লিখে দিলেন হাসিখুশি, ছিপছিপে তরুণ আবদুল্লা। একমাত্র ‘দুনিয়া’ শব্দটা চেনা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এমএ দ্বিতীয় বর্ষের নাইজিরীয় ছাত্রটি হাসলেন, ‘‘আমার মাতৃভাষা হাউসায় দুনিয়া শব্দটা আরবি থেকে ধার করা। গোটা বাক্যটার মানে, বিশ্ব মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা।’’ শুক্রবার যাদবপুরে একুশের অনুষ্ঠানে হাউসার সঙ্গে ইংরেজি মিশিয়ে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস নিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন আবদুল্লা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনদার ক্যান্টিনের দিকের রাস্তার মুখে ওই অনুষ্ঠানের ডাক দিয়েছিলেন ইন্টারন্যাশনাল বয়েজ় হস্টেলের আবাসিকেরা। কিন্তু উদ্যাপনে মিশে গেলেন আরও অনেকে। মাস কমিউনিকেশনের ছাত্র ঢাকার ইমতিয়াজ় সেলিম, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে নোয়াখালির অন্তনু পাল, ইংরেজির আঁচল শর্মার (ঢাকা) সঙ্গে স্থানীয় ছাত্রছাত্রীদের ভিড়। জ়াম্বিয়া, লেসোথো, বুরুন্ডি, সোমালিয়ার ছাত্রেরাও এই প্রথম একুশের তাৎপর্য কী, বুঝলেন। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গানের সঙ্গে তাঁরাও থমথমে মুখে দাঁড়িয়ে। আন্তর্জাতিকতার বেড়া ছুঁয়ে তখন দাঁড়িয়ে কলকাতার একুশের উৎসব।
ভাষা দিবসে পিছিয়ে নেই নিউ টাউন এবং বিধাননগরও। গান ও কবিতায় গলা মিলিয়ে অসংখ্য মানুষ মিছিল করলেন, শ্রদ্ধা জানালেন ভাষা শহিদদের। এ দিন সকালে নিউ টাউনের রবীন্দ্রতীর্থ থেকে নজরুলতীর্থ পর্যন্ত এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হয়। উদ্যোক্তা ছিল নিউ টাউন রেসিডেন্টস ওয়েলফেয়ার ফোরাম। অংশ নেন ১২টি ব্লক এবং একাধিক আবাসনের বাসিন্দারা। একই সময়ে বিধাননগর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপন সমিতির আয়োজনে সল্টলেক পিএনবি মোড় থেকে লাবণি আইল্যান্ড পর্যন্ত মিছিল হয়। স্কুলপড়ুয়া, লোকশিল্পীদের পাশাপাশি মহিলা ঢাকিরা পা মেলান। ছিলেন মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়, শুভাপ্রসন্ন, ভাস্কর নিরঞ্জন প্রধান, বিমল কুণ্ডু প্রমুখ।