সমস্যা: এই দেহ সংরক্ষণ যন্ত্র ফাঁকা পাওয়াই মুস্কিল। নিজস্ব চিত্র
আট ফুট লম্বা মৃতদেহ সংরক্ষণ যন্ত্র। তার ভিতর দু’থাকে রয়েছে দু’টি ড্রয়ার। সেই ড্রয়ার ফাঁকা পাওয়াই মুস্কিল। প্রায় প্রতি দিনই কারও না কারও দেহ রাখা থাকে সেখানে। বিরাটি উড়ালপুলের কাছে উত্তর দমদম পুরসভা হাসপাতালে শহরতলিতে মৃতদেহ রাখার প্রথম আধুনিক ব্যবস্থা কার্যত দাতব্যে পরিণত হয়েছে বলে দাবি করছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
পিস হাভেনের আদলে ২০১৫ সালে এই হিমযন্ত্রটি বসিয়েছিল দমদম পুরসভা। পুরসভার দাবি, কিছু টাকার বিনিময়ে আট দিন অনায়াসে মৃতদেহ তাজা রাখা যায় এখানে। মূলত মৃতদের যে আত্মীয়-পরিজনেরা দূরে থাকেন তাঁদের কথা ভেবেই এটি তৈরি হয়েছিল। উত্তর দমদম পুর হাসপাতালের তিন দিকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা আছে— বি টি রোড, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে এবং যশোর রোড। এই রাস্তাগুলিতে নিত্য দুর্ঘটনা ঘটে। মৃতদের পরিজনেরা না আসা পর্যন্ত আশপাশের থানাগুলির মৃতদেহ রাখতে ভরসা এই হিমযন্ত্র।
ড্রয়ার বেশি না থাকায় অনেক সময় মৃতদেহ লাইনেও রাখা হয়। এক দিন বাড়িতে বা অন্য কোথাও বরফ দিয়ে রাখার পরে এখানে ড্রয়ার ফাঁকা হলে আগে নাম লেখানোর ভিত্তিতে তাঁরা জায়গা পান। সব থেকে বড় সমস্যা রুটিন মেরামতির সময়ে। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, যে সংস্থা এই হিমযন্ত্রটি বসিয়েছিল তাদের বলা হয়, এক দিনের মধ্যেই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে মেরামতি করে দিতে।
উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) মহুয়া শীল বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে পরিজনেরা বাইরে থাকায়, তাঁরা না আসা পর্যন্ত দেহ সৎকার করা যায় না। এই সমস্যার কথা ভেবেই উত্তর ২৪ পরগনায় দেহ সংরক্ষণ করতে হিমযন্ত্র বসিয়েছিলাম আমরাই প্রথম।’’ তিনি জানান, যে উদ্দেশ্য নিয়ে সেটি তৈরি হয়েছিল তা পুরো সফল হচ্ছে না। দুর্ঘটনায় যে মৃত্যু হয়, পুলিশ সেই দেহই রেখে যায়। পরিচয় না পাওয়া পর্যন্ত দেহ পড়ে থাকে অনেক দিন। পুরসভার দাবি, ফলে দাতব্য হয়ে গিয়েছে এই পরিকল্পনা। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি ধ্রুবজ্যোতি দে বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার পরে বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সময় পেরিয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে মৃতদেহ রাখতে এই পুর ব্যবস্থাই ভরসা পুলিশের।’’