মালা রায়। —ফাইল চিত্র
কেওড়াতলার শ্মশানকালী পুজো নিয়ে এ বার ‘কোন্দল’ তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে। কেওড়াতলা শ্মশানে দীর্ঘকাল ধরেই ওই পুজো হয়ে আসছে। বর্তমানে যে জমিতে ওই পুজো হয়, তা পুরসভার। স্বভাবতই পুজোর আগে পুরসভার অনুমতি নিতে হয়। এ বার সেই অনুমতি এখনও ‘আটকে’ রয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। কিন্তু কেন?
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পুজো কমিটিতে এলাকার বিধায়ক, মন্ত্রী, কলকাতার মেয়র, স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি মেয়র, এমনকি দক্ষিণ কলকাতার প্রাক্তন সাংসদের নাম থাকলেও ‘বাদ’ পড়েছেন বর্তমান সাংসদ মালা রায়। যিনি আবার পুরসভার চেয়ারপার্সন এবং যে এলাকায় ওই পুজো হচ্ছে, সেখানকার কাউন্সিলরও। তাই কেন তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে, কমিটিতে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বিষয়টি সত্যিই ভুল, না ইচ্ছাকৃত, তা নিয়ে তরজা চলছে। এলাকার মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাংসদ মালা রায়ের পুরনো
‘ঝগড়া’ই এর প্রধান কারণ বলে অনেকে মনে করছেন।২০০৪ সালের আগে ওই পুজো করতেন এলাকার বাসিন্দারা। সে বার পুজোর পরে ভাসানের সময়ে আগুন লেগে যায় প্রতিমায়। পরের মাসে অমাবস্যায় ফের পুজো হয় নতুন ঠিকানায়। কেওড়াতলায় কাঠের চুল্লির পাশেই পুরসভার জমি। সে বার মালা রায় পুরসভার অনুমতি নিয়ে সেখানে পুজো করেন। উদ্বোধন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকে ২০১০ পর্যন্ত ওই পুজো পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মালাদেবী। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের আগেই মালাদেবী কংগ্রেসে চলে যান। পরবর্তীকালে শোভনদেববাবু ওই পুজো পরিচালনা করে এসেছেন। এ বারও পুজো কমিটির সভাপতি হিসেবে তাঁর নামই রয়েছে।
শনিবার অনুমতির জন্য পাঠানো ওই আবেদনপত্রে মালাদেবীর নাম না থাকায় অস্বস্তিতে পড়েছে পুর প্রশাসন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মালাদেবী বলেন, ‘‘আমার নাম যে নেই, তা আপনাদের কাছেই শুনলাম। পুজোটা আমার এলাকায়। ওই পুজোর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম অনেক বছর।’’ আবার শোভনদেববাবুর বক্তব্য, ‘‘মালা কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে পুজো পরিচালনা করার কথা বলেন। তখন থেকেই করছি। আর মালা তো পরে জানিয়ে দিয়েছিল, ওই পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকতে চায় না।’’ যদিও
মালাদেবীর দাবি, ‘‘পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই না, এমন কথা আমি কখনওই বলিনি।’’আর ক’দিন পরেই কালীপুজো। তার আগেই বিতর্কের আঁচে উত্তপ্ত শ্মশান চত্বর।