প্রতীকী ছবি।
ডাকাতি করে খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক বন্দি ২০ বছর পরে জামিন পেলেন কলকাতা হাইকোর্ট থেকে। বুধবার প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করন নায়ার রাধাকৃষ্ণন ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ওই বন্দিকে জামিন দিয়েছে।
বিজয় দাস নামে ওই বন্দির বাড়ি তপসিয়া থানার গোবিন্দ খটিক রোডে। তাঁর আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার জানান, ১৯৯৯ সালের ৭ অগস্ট রাতে বড়বাজারের সোনা ব্যবসায়ী ভ্রমরলাল ভাটিয়া গাড়িতে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। চিৎপুর থানা এলাকায় গাড়ি থামিয়ে তাঁর কাছ থেকে সোনা ছিনতাই করে কয়েক জন দুষ্কৃতী। তাদের এক জন পালানোর আগে চালক চিত্তরঞ্জন চক্রবর্তীকে গুলি করে খুন করে। গুলি করা হয় ব্যবসায়ীর ছেলে সঞ্জয়কেও। তাঁর পেটে গুলি লাগে। তবে তিনি বেঁচে যান। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চিৎপুর থানায় পুলিশ বিজয় ও তাঁর চার সঙ্গী, রাজেশ মল্লিক, রাজেশ সোনকার, কৃষ্ণদেব প্রধান ও বিকাশ দাসকে গ্রেফতার করে। সেই সময়ে বিজয়ের বয়স ছিল ২২ বছর। জেলে থাকা অবস্থাতেই নিম্ন আদালতে বিচার চলে বিজয়দের। নিম্ন আদালত ২০০৫ সালে পাঁচ জনকেই যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দেয়।
২০০৬ সালে বিকাশ বাদে বাকিরা নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে জেল থেকেই হাইকোর্টে আপিল মামলা দায়ের করেন। রাজদীপ জানান, পরবর্তী কালে রাজেশ মল্লিক, রাজেশ সোনকার ও কৃষ্ণদেব প্রধানের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট। তবে তাঁদের আপিল মামলার নিষ্পত্তি হয়নি এখনও। ২০১৩ সালে আপিল মামলা চলাকালীন বিজয় রাজ্য সরকারের কাছে মুক্তির আবেদন জানিয়ে বলেন, তাঁর ১৪ বছর জেল খাটা হয়ে গিয়েছে। তাঁকে মুক্তি দেওয়া হোক। সেই আবেদন ২০১৭ সালে খারিজ করে দেয় রাজ্য।
বিজয়ের আইনজীবী জানান, তার পর থেকে আপিল মামলা ও একই সঙ্গে দায়ের করা জামিনের আবেদনের মামলাটির শুনানি কোনও কারণে হচ্ছিল না। গত সপ্তাহে জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলাটি প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে। প্রধান বিচারপতি প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের কাছে বিজয়ের আচরণ সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব করেছিলেন। এ দিন সরকারি কৌঁসুলি ওই রিপোর্ট দিয়ে জানান, বন্দির আচরণ সন্তোষজনক। তা শুনে বিজয়ের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে ডিভিশন বেঞ্চ।
বিজয়ের আইনজীবী জানান, বিকাশ এখনও জেলে রয়েছেন। তাঁর কোনও পরিজন নেই বলে জানা গিয়েছে। তাঁর জন্যও জামিনের আবেদন করা হবে।