শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে গাড়ি এবং নিত্যযাত্রীদের ভিড়ের চাপ কমাতে রাজাবাজার ট্রাম ডিপো চত্বরে আধুনিক পার্কিং লট এবং অটো, ট্যাক্সি ও বাসের স্ট্যান্ড করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। যার পোশাকি নাম ‘মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট হাব’।
প্রাথমিক ভাবে শিয়ালদহ চত্বরে পরিবহণ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজতে এবং যানজট ব্যবস্থাকে সুসংহত করার উদ্দেশ্যে রেলের সংস্থা ‘রাইটস’-কে সমীক্ষার দায়িত্ব দিয়েছে রাজ্য সরকার। আগামী তিন মাসের মধ্যে ওই রিপোর্ট জমা দেবে রাইটস। তার পরেই শিয়ালদহ এলাকা ঢেলে সাজার কাজ শুরু করা হবে। পাশাপাশি, সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজাবাজার nট্রাম ডিপোয় ট্রান্সপোর্ট হাব তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের পূর্ত দফতরকে।
কলকাতার উত্তর এবং দক্ষিণ শহরতলির অন্যতম প্রবেশপথ শিয়ালদহ স্টেশন। স্বভাবতই, প্রতি ঘণ্টায় লক্ষাধিক মানুষের পা পড়ে ওই স্টেশন ও তার আশপাশের চত্বরে। অফিসের সময়ে যে সংখ্যাটা বেড়ে কয়েক লক্ষে দাঁড়িয়ে যায়। এ বার তার উপরে যুক্ত হতে চলেছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। প্রাথমিক পর্যায়ে সল্টলেক থেকে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো শেষ হচ্ছে শিয়ালদহ স্টেশনে। দ্বিতীয় পর্যায়ে তা শিয়ালদহ থেকে যাবে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত।
আপাতত শিয়ালদহে শেষ স্টেশন হওয়ার কারণে যাত্রী-সংখ্যা গড়ে প্রতি ঘণ্টায় এক লাফে ৫৫ হাজার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রাজ্য প্রশাসনের।
সে সময়ে শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে বিপুল ট্র্যাফিক-নৈরাজ্য যাতে তৈরি না হয়, সে জন্যই তা ঢেলে সাজার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
পূর্ত দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘শিয়ালদহ স্টেশনে ঢোকা-বেরোনোর পথ যথেষ্ট চওড়া নয়। সেটা বাড়ানোর ভাবনা রয়েছে। রয়েছে পায়ে হাঁটা যাত্রীদের বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বার করার পরিকল্পনা। যাতে একটি বিন্দুতে যাত্রীর অত্যধিক চাপ তৈরি না হয়।’’ এ জন্য মৌলালি, রাজাবাজার, মহাত্মা গাঁধী রোড, বেলেঘাটা— সব দিকেই ট্র্যাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজার কথা ভাবা হয়েছে। নতুন পরিকল্পনায় থাকছে বেশ কয়েকটি নতুন সেতু, ফুট ওভারব্রিজ, স্কাইওয়াক এবং স্লিপ রোড তৈরির ভাবনাও।
এই অবস্থায় শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে যাত্রী তোলার জন্য যে বিপুল পরিমাণ গাড়ি এসে দাঁড়ায়, তা থাকলে ট্র্যাফিক-নৈরাজ্য ঠেকানো অসম্ভব হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা। সে কারণেই রাজাবাজার ট্রাম ডিপোয় বহুতল মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট হাব তৈরি করে সেখানে গাড়ির যাবতীয় চাপ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।