—প্রতীকী চিত্র।
বাজির ধোঁয়া ছিল না। বায়ুদূষণ যাতে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট না করে, সেই লক্ষ্যে সরকারি প্রচার ও তৎপরতায় খামতিও ছিল না।
তবু শনিবার, অনূর্ধ্ব যুব বিশ্বকাপ ফুটবল ফাইনালের দিন যে কলকাতার বাতাস একেবারে নির্মল ছিল, এমনটাও বলছে না পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের যন্ত্রে ধরা পড়া তথ্য।
পর্ষদের অটোম্যাটিক অ্যামবিয়েন্ট এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং স্টেশনের রেকর্ড অনুযায়ী, শনিবার কলকাতার বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণা বা পিএম ১০ গড়ে প্রতি ঘন মিটারে ছিল ১৪০ মাইক্রোগ্রাম। সহনশীল মাত্রা যেখানে ১০০ মাইক্রোগ্রাম। আবার অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা বা পিএম ২৫-এর গড় পরিমাণ ছিল প্রতি ঘন মিটারে ৭৫ মাইক্রোগ্রাম। যা সহনশীল মাত্রার চেয়ে ১৫ মাইক্রোগ্রাম বেশি।
ট্যুর্নামেন্ট শুরুর আগে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বারবার আয়োজক রাজ্যগুলির পর্ষদকে সেই সব শহরের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বিশেষ নির্দেশ দিয়েছিল। কারণ, ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা ফিফা জানিয়ে দেয়, এই ধরনের ট্যুর্নামেন্ট হওয়ার অন্যতম শর্ত হল, যেখানে খেলা হচ্ছে, সেখানকার বাতাস নির্মল হতে হবে।
তবে শনিবার, ফাইনালের দিন শহরের বাতাস পুরোপুরি নির্মল না হলেও এত খারাপ হয়নি যে, খেলা বাতিল হবে। এমনটাই বক্তব্য পর্ষদের কর্তাদের। পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলছেন, ‘‘যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন ও তার আশপাশে সল্টলেকের যে সব তল্লাট, সেখানকার বাতাসের গুণমান শহরের গড় অবস্থার চেয়ে ভাল ছিল।’’
কিন্তু ফাইনালের দিন গোটা শহরের বাতাসের গড় অবস্থা জেনে পর্ষদের কর্তারা একটা কথা মেনে নিচ্ছেন। দীপাবলি ও তার পরের দিন অসময়ে তুমুল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া না হলে ২২ অক্টোবরের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটি হয়তো কলকাতা থেকে সরিয়ে নিয়ে যেত ফিফা। ঠিক যে ভাবে মাঠ খারাপ থাকার কারণে ম্যাচ সরে এসেছিল গুয়াহাটি থেকে। কারণ তখন, অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে তাপমাত্রা এমনিতেই কমছে। তার উপরে বাজির বিষাক্ত ধোঁয়া ছিল শহরের আকাশ জুড়ে। পর্ষদের অনেকেরই বক্তব্য, বৃষ্টি না হলে তখন খেলা ঘিরে যা হত, সেই সব ঘটনা কলকাতার ভাবমূর্তির পক্ষে মোটেই ভাল বিজ্ঞাপন হত না। কিন্তু বাজি ছাড়া শনিবারে কলকাতার বাতাসের হাল এমন হলে বৃষ্টি ছাড়া বাজির ধোঁয়ায় কী হত, তা নিয়ে চিন্তিত তাঁরা। পর্ষদের কর্তারা মেনে নিচ্ছেন, প্রতি বার বৃষ্টি বাঁচাবে না। তাই, অঘটনের উপরে ভরসা না করে বায়ুদূষণের মাত্রা কী ভাবে কমানো যায়, তা দেখাই এখন পর্ষদের চ্যালেঞ্জ।