যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল চিত্র।
তীব্র অর্থকষ্টে ভুগছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। আর্থিক সাহায্যের জন্য প্রাক্তনীদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন উপাচার্য। এরই মধ্যে পড়ুয়াদের দাবি মেনে বিভিন্ন খাতে খরচের বহরে ক্যাম্পাসের মধ্যেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
ক্যাম্পাসে গান্ধী ভবন প্রেক্ষাগৃহ সংস্কারের কারণে বন্ধ থাকলেও ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার নবীন বরণ অনুষ্ঠানের জন্য বিভাগীয় ছাত্র সংসদের (ফেটসু) দাবিতে মাসখানেক আগে ওই প্রেক্ষাগৃহ খুলে দিতে হয়েছিল। সেটিকে সাময়িক সংস্কার করতেই কর্তৃপক্ষের খরচ হয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। এর পরে স্থায়ী ভাবে ওই প্রেক্ষাগৃহ মেরামত করতে হবে। সূত্রের খবর, এর সঙ্গে ফেটসু-র দাবি মেনে ছাত্রদের মেন হস্টেলের মাঠে রাতে তাঁদের খেলার জন্য আলো লাগানোর খরচ হিসাবে পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করতে হয়েছে। মেন হস্টেলে ছাত্রদের ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য ওয়াইফাই সংযোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর জন্য তাঁদের বছরে খরচ হচ্ছে ১২ লক্ষ টাকার বেশি। কিন্তু অভিযোগ, পড়ুয়ারা পুরনো কেব্ল-এর ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়তে চাইছেন না। ফলে, ইন্টারনেট পরিষেবা খাতে খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে বার্ষিক ২২ লক্ষ টাকা। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, টাকার অভাবে যখন মার খাচ্ছে পঠনপাঠন থেকে গবেষণা, ফি বাড়ানোর ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের তরফেই আগে আপত্তি উঠেছে, সেই পরিস্থিতিতে তাঁদের এই ধরনের দাবি মেনে নেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত?
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘প্রবল অর্থকষ্টের মধ্যেও শিক্ষকেরা গবেষণার মান অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। অন্য দিকে এই ধরনের খরচ শুধু যে শিক্ষার মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে তা-ই নয়, ছাত্রদের ফি না বাড়ানোর দাবিকেও দুর্বল করছে।’’
যদিও ফেটসুর বিদায়ী চেয়ারপার্সন অরিত্র মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘ছাত্র সংসদের নির্বাচনের পাশাপাশি পড়াশোনা ও পরিকাঠামো সংক্রান্ত বিভিন্ন মৌলিক দাবি বহু বছর ধরে জানিয়ে আসছি। তা নিয়ে পদক্ষেপ করতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা সরকার। উল্টে ছাত্রছাত্রীদের মত এবং ছাত্র সংসদকে অগ্রাহ্য করে তাঁরা একের পর এক নীতি চাপাচ্ছেন।’’ অরিত্র আরও বলেন, ‘‘নীতিগত ভাবে ফি বৃদ্ধিতে আমাদের আপত্তি আছে। এখনও সেই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কিছু জানাননি। তাঁরা জানালে আমরাও সাধারণ সভা করে সিদ্ধান্ত জানাব।’’