চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে বদলে গেল ছবি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বেলুড় মঠের নাম ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন দেওয়া সিমেন্ট প্রস্তুতকারী সংস্থা পিছু হটল। মঙ্গলবার আনন্দবাজার অনলাইনে খবর প্রকাশিত হয়েছিল, কংক্রিটো সিমেন্টের বিজ্ঞাপনে ‘ভরসা’র প্রশ্নে বেলুড় মঠের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। যা নিয়ে আইনি ব্যবস্থার পথে হাঁটার কথা বলেছিলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন কর্তৃপক্ষ। বুধবার সকালে দেখা গেল, ওই বিজ্ঞাপনের হোর্ডিংয়ে ‘মঠ’ শব্দটি থাকলেও ‘বেলুড়’ লেখা জায়গাটি ছেঁড়া। যা থেকে বোঝা যাচ্ছে, তড়িঘড়ি ওই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সিমেন্ট প্রস্তুতকারী সংস্থাটির পদক্ষেপের কথা জেনে ওই খবর প্রকাশ্যে আনার জন্য আনন্দবাজার অনলাইনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ। তিনি বলেন, ‘‘মঙ্গলবার শুনেছিলাম, ওই সংস্থা হোর্ডিং থেকে বেলুড় মঠের নাম সরিয়ে নেওয়ার মনোভাব প্রকাশ করেছে। তাই আমরা আইনি পথে যাওয়ার জন্য দু’-এক দিন সময় নিচ্ছিলাম। কিন্তু শুনলাম হোর্ডিং থেকে ‘বেলুড়’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়েছে। ওদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে দেখে ভাল লাগছে। ঈশ্বর ওদের কৃপা করুন।’’
তবে কে বা কারা ওই হোর্ডিংয়ের নির্দিষ্ট জায়গাটি ছিঁড়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তবে যে হেতু বেলুড় মঠের মতো প্রতিষ্ঠান কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল, তাই অনেকে মনে করছেন, সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সংস্থাই ওই পদক্ষেপ করেছে। হাওড়া ব্রিজ থেকে নেমে কলকাতার দিকে আসতে ব্রেবোর্ন রোড উড়ালপুলের বাঁ দিকের বহুতলের একেবারে উপরে ওই সিমেন্ট সংস্থার দু’টি হোর্ডিং রয়েছে। নীচের হোর্ডিংয়ে ‘বেলুড় মঠ’ শব্দটি লেখা ছিল। এ নিয়ে মঙ্গলবার সুবীরানন্দ মঙ্গলবারেই বলেছিলেন, ‘‘আমরা কোনও রকম বিজ্ঞাপন করি না। অথচ আমাদের নাম ব্যবহার করেই বিজ্ঞাপন করা হয়েছে শুনে অবাক লাগছে। কাউকে কখনওই এই ধরনের অনুমতি দেওয়া হয় না। এ ক্ষেত্রেও অনুমতি দেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই।’’ প্রবীণ সন্ন্যাসী জানিয়েছিলেন, তাঁরা পুলিশের কাছেও যাওয়ার কথা ভাবছেন। কারণ, তাঁদের অজ্ঞাতসারেই বেলুড় মঠের নাম ব্যবহার করে বিজ্ঞাপনটি দেওয়া হয়েছে।
(বাঁ দিকে) মঙ্গলবারের ছবি। বুধবারের ছবি (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
কংক্রিটো সিমেন্ট প্রস্তুত করে ‘নুভোকো ভিস্তাস কর্পোরেশন লিমিটেড’ নামে একটি সংস্থা। মঙ্গলবার ওই সংস্থার ‘ম্যানেজার মার্কেটিং’ নবীন খানের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করায় তিনি বলেছিলেন, ‘‘বিষয়টা আমার জানা নেই। তবে বিজ্ঞাপনের জন্য কেউ পুলিশের কাছে যেতে চাইলে যাক! আমাদের কোনও সমস্যা নেই।’’ তবে পরে ওই সংস্থার ব্র্যান্ড ম্যানেজার অয়ন ভট্টাচার্য আনন্দবাজার অনলাইনের দফতরে যোগাযোগ করে বলেছিলেন, ‘‘যদি এটা নিয়ে কারও কোনও অভিযোগ থাকে বা বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষের কোনও আপত্তি থাকে, তবে ওই হোর্ডিং আমরা সরিয়ে নেব।’’ হোর্ডিং সরানো না হলেও মঠের আগে থেকে ‘বেলুড়’ শব্দটি যে বাদ পড়েছে, তা দেখা যাচ্ছে। ‘মঠ’ শব্দটি নিয়ে রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষের কোনও আপত্তি থাকবে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।