ভিআইপি রোডে বেআইনি নির্মাণে বাধা

ভিআইপি রোডের ধারে উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন মোড় পর্যন্ত সব বেআইনি নির্মাণের কাজ আটকাতে নির্দেশ দিল জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুন্যালের পূর্বাঞ্চল বেঞ্চ। একইসঙ্গে ওই রাস্তার নয়ানজুলির পাড় আর যাতে কোনও ভাবে জবরদখল না হয় তার ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিল ট্রাইবুন্যাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৫ ১৯:৫৭
Share:

—ফাইল চিত্র।

ভিআইপি রোডের ধারে উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন মোড় পর্যন্ত সব বেআইনি নির্মাণের কাজ আটকাতে নির্দেশ দিল জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুন্যালের পূর্বাঞ্চল বেঞ্চ। একইসঙ্গে ওই রাস্তার নয়ানজুলির পাড় আর যাতে কোনও ভাবে জবরদখল না হয় তার ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিল ট্রাইবুন্যাল।

Advertisement

নির্মাণকারী সংস্থা ও অন্যান্যদের দ্বারা উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন মোড় পর্যন্ত নয়ানজুলির পাড় বেআইনিভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে— এমন অভিযোগ করে ট্রাউবু্ন্যালে মামলা দায়ের করেছিল পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ। গত ২১ তারিখ মামলাটি আদালতে গৃহীত হয়। ওই দিনই বিচারক প্রতাপকুমার রায় নির্দেশ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, দক্ষিণ দমদম পুরসভা আর রাজ্যের মুখ্য সচিবকে নির্দেশ দেন, ওই এলাকা জুড়ে সব বেআইনি নির্মাণের কাজ বন্ধ করতে আধিকারিক নিয়োগ করতে। একইসঙ্গে নয়ানজুলির পাড় যেন আর কোনওভাবেই জবরদখল না হয় তার জন্য ব্যবস্থা নিতে।

বিচারক তাঁর রায় দিতে গিয়ে এমনও জানান, সাধারণত অন্তবর্তীকালীন দেওয়ার সময় সব পক্ষকেই ডাকা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে যেহেতু পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার বিষয়টি উঠে আসছে ফলে এক পক্ষ শুনেই দক্ষিণ দমদম পুরসভা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আর মুখ্য সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে আগে বেআইনি নির্মাণের কাজ বন্ধ করতে।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের আইনজীবী সোমনাথ রায়চৌধুরি জানান, মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারক তাঁর নির্দেশে ২০১০ সালে পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদারকে লেখা দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ার পার্সন অঞ্জনা রক্ষিতের একটি চিঠির বিষয়ের উল্লেখ করেন। সেই চিঠিতে পুরসভার চেয়ার পার্সন অঞ্জনাদেবী পূর্তমন্ত্রীকে জানান একটি নির্মাণকারী সংস্থা পুরসভা অনুমোদিত নকশা না মেনে লেকটাউন লিঙ্ক রোড আর ভিআইপি রোডের সংযোগস্থলে বেআইনি নির্মাণ করছে। ওই সংস্থাটি পূর্ত দফতরের জায়গা দখল করে লোহার প্রাচীর তুলে দিয়েছে বলেও সেই সময় মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন তিনি। ওই বিষয়ে তিনি মন্ত্রীর হস্তক্ষেপও চান। সোমনাথবাবু বলেন, ‘‘ওই ধরনের নানান নথিই আমরা আদালতের কাছে জমা দিই। ফলে আমাদের মামলাটির মধ্যে সত্যতা রয়েছে বলে আদালত মনে করছে।’’

পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সহ-সম্পাদক সৌরভ চক্রবর্তী জানান, পুরো এলাকাটা কার্যত জলশূন্য হয়ে গেল খুব তাড়াতাড়ি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা উন্নয়ন চাই। কিন্তু বিজ্ঞানসম্মত ভাবে। নয়ানজুলিগুলি ভরাট হয়ে যাওয়ায় এখন ভিআইপি রোড বর্ষায় ভাসছে। আমরা আরও নথি আদালতের কাছে দেব।’’

উল্লেখ্য উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন পর্যন্ত নয়ানজুলি ভরাট করে সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছে বলে সবুজ ট্রাইবুনালে এর আগে এক ব্যাক্তি একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন। তার প্রেক্ষিতে ট্রাইবুন্যাল ঘটনার সত্যতা সরেজমিনে তদন্ত করতে জুন মাসে সেখানে অ্যাডভোকেট কমিশনারকে পাঠান। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান নয়ানজুলির মতোই বিভিন্ন বড় বড় গর্ত (পিট) মাটি দিয়ে ভরাট করা। সেগুলির ওপরে সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে। সেখানে একেবারে ভেজা মাটির ওপরে ঘাসের চাদরে টুকরো বসানো হয়েছে তার ছবিও তোলেন অ্যাডভোকেট কমিশনার। ওই মামলাটির শুনানি আগামী ৩১ জুলাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement