প্রতীকী ছবি।
ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে অসংখ্য গাছ নষ্ট হওয়ার পরে সবুজ বাঁচাতে কয়েক দফায় পর্যালোচনা হয়। তার ভিত্তিতে নতুন বাড়ি কিংবা আবাসনের ক্ষেত্রে ছাদে বাগান, আনাজ চাষ বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব নিল নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি বা এনকেডিএ। কিন্তু ছাদের বাগান বাধ্যতামূলক করতে গেলে নীতিগত পরিবর্তন করতে হবে। তাই নীতি পরিবর্তনের জন্য সংস্থার বোর্ড মিটিংয়ে নেওয়া প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠাতে চলেছে ওই সংস্থা।
এনকেডিএ সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের অনুমোদন মিললে নতুন বাড়ি বা বহুতলের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকরী করা হবে। তবে পুরনো বাড়ি বা আবাসনের ক্ষেত্রে বিষয়টি বাধ্যতামূলক হবে না। সে ক্ষেত্রে তাদের উৎসাহ দিতে সম্পত্তিকরে ছাড় দেওয়ার চিন্তাভাবনাও করা হয়েছে। নতুন বাড়ির ক্ষেত্রেও কিছু ছাড় দেওয়া নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হয়েছে।
আমপানে নিউ টাউনে কয়েকশো গাছ উপড়ে পড়েছে। তার মধ্যে কিছু গাছ বাঁচানো সম্ভব হলেও বেশির ভাগই নষ্ট হয়েছে। এনকেডিএ সূত্রের খবর, রাস্তার ধারে বা বুলেভার্ডের বদলে ফাঁকা জমিতে বড় গাছ লাগানোর প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। বাকি জায়গায় ছোট বা মাঝারি গাছ লাগানো হবে। সবুজ বাঁচাতে আলোচনাসভাও করে এনকেডিএ। সেখানে বিশেষজ্ঞ থেকে বাসিন্দাদের একাংশের মত ছিল, বাড়ি বা বহুতলে রুফটপ গার্ডেনিং বা ছাদে বাগান করার বিষয়ে জোর দেওয়া হোক।
যদিও আগে এমন ছাদে বাগান করার আবেদন জানিয়েছিল এনকেডিএ। কিন্তু তেমন সাড়া মেলেনি। নিউ টাউনের সিবি মার্কেটে ইতিমধ্যে এনকেডিএ ছাদে বাগান করেছে। পাশাপাশি সেখানে সৌর প্যানেল এবং বৃষ্টির জল ধরে রাখার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। কিন্তু ছাদে বাগান করার ক্ষেত্রে তেমন উৎসাহ দেখা যায়নি। এ বার তাই নতুন বাড়ির ক্ষেত্রে ছাদে বাগান বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব নিয়েছে এনকেডিএ। প্রাথমিক ভাবে ছাদে কতটা অংশ বাগান বা আনাজ চাষের জন্য রাখা যাবে তার একটি খসড়া প্রস্তাবও নেওয়া হয়েছে।
যেমন, ৫ কাঠা জমিতে ভবন তৈরি হলে প্রায় ৪০ শতাংশ বাগান করা যেতে পারে। শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এক একর জমি পর্যন্ত ৩০ শতাংশ ছাদ-বাগান করা যেতে পারে।
বাসিন্দাদের একাংশের মতামত, সবুজ বাঁচাতে এমন প্রস্তাব কার্যকর করা প্রয়োজন। তবে তাতে খরচও রয়েছে। পাশাপাশি বাগান বা আনাজ চাষে প্রশিক্ষণেরও প্রয়োজন। অবশ্য এনকেডিএ সূত্রের খবর, নিশ্চিত ভাবে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে। এনকেডিএ-র এক শীর্ষ কর্তা জানান, সবুজ বাঁচাতে নতুন বাড়ির ক্ষেত্রে ছাদে বাগান বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে নীতি পরিবর্তন করতে হয়। তাই প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হচ্ছে। পুরনো বাড়ির ক্ষেত্রে তা বাধ্যতামূলক হবে না। তবে উৎসাহ দিতে বেশ কিছু ছাড় দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।