বঙ্কিম সেতু

শরীর এখনও মজবুত, দরকার খানিক রূপটান

চল্লিশের কোঠায় পৌঁছেও শক্তপোক্ত তার শরীর। শুধু বাইরের আবরণে প্রলেপ দিতে হবে। শুক্রবার হাওড়ার বঙ্কিম সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে প্রাথমিক ভাবে এমনটাই মতামত দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের সেতু বিশেষজ্ঞ সংস্থা রাইটস্।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:১৬
Share:

চলছে পরীক্ষা। শুক্রবার। — নিজস্ব চিত্র

চল্লিশের কোঠায় পৌঁছেও শক্তপোক্ত তার শরীর। শুধু বাইরের আবরণে প্রলেপ দিতে হবে।

Advertisement

শুক্রবার হাওড়ার বঙ্কিম সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে প্রাথমিক ভাবে এমনটাই মতামত দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের সেতু বিশেষজ্ঞ সংস্থা রাইটস্। তারা জানিয়েছে, সেতুর কাঠামো ও কংক্রিটের আস্তরণ অক্ষতই রয়েছে। সেতুর নীচ দিয়ে যাওয়া টানেল বোরিং মেশিনের তীব্র কম্পনেও সেতুর বিশেষ কোনও ক্ষতি হয়নি। তবে সবটাই যথাযথ ভাবে বলা যাবে প্রতিটি রিপোর্ট বিশ্লেষণ করার পরে।

নির্মীয়মাণ বিবেকানন্দ উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পরে কলকাতার অন্যান্য সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সেতু নির্মাণকারী সংস্থা রাইটস্-কে দায়িত্ব দেয় কেএমডিএ। প্রথম ধাপে পাঁচটি সেতুর কাঠামো কেমন রয়েছে, তা দেখার কাজ শুরু হয়েছে। বঙ্কিম সেতু-সহ এই পাঁচটি সেতু হল শিয়ালদহ, বাঘা যতীন, অম্বেডকর ও চিংড়িঘাটা সেতু। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে শিয়ালদহ উড়ালপুলের নীচে হকার ভরে থাকায় কাজই করতে পারেননি বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারেরা। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর গোচরে আসতেই শুক্রবার কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কে তিনি নির্দেশ দেন দ্রুত ওই কাজ কী ভাবে করা যায় তা দেখতে হবে। পাশাপাশি ঢাকুরিয়া ব্রিজের বেহাল অবস্থা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট পৌঁছেছে। এ ব্যাপারে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে এ দিনই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

পূর্ব রেলের হাওড়া শাখার রেললাইনের উপর দিয়ে যাওয়া বঙ্কিম সেতুর ক্ষেত্রে অবশ্য শিয়ালদহ উড়ালপুলের হকার সমস্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছেন রাইটস্-এর ইঞ্জিনিয়ারেরা।

সংস্থার যুগ্ম জেনারেল ম্যানেজার রাজীবকুমার সিংহের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল এ দিন বঙ্কিম সেতুর হাওড়া স্টেশন প্রান্ত থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত পরীক্ষা করেন। পরে রাজীববাবু জানান, পরীক্ষার সময়ে ইঞ্জিনিয়ারদের সেতুর নীচে হকার বা জবরদখলকারী সংক্রান্ত সমস্যায় পড়তে হয়নি। সেতুর নীচ কতটা শক্তপোক্ত দেখতে রিবাউন্ড হ্যামার (সেতুর ভিতরে থাকা কংক্রিট ও লোহার শক্তি পরীক্ষার যন্ত্র) নামে একটি যন্ত্র বসিয়ে পরীক্ষা করা হয়।

রাজীববাবু বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে সেতুর স্বাস্থ্য ভালই রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে সমস্ত রিপোর্ট বিশ্লেষণ করার পরেই আরও নিশ্চিত ভাবে তা বলা যাবে। সেই রিপোর্ট আমরা রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দেব।’’

রাইটস্-এর ইঞ্জিনিয়ারেরা জানান, কয়েক মাস আগে এই সেতুর স্তম্ভের নীচ দিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের জন্য টানেল বোরিং মেশিন চালিয়ে সুড়ঙ্গ কাটা হয়েছে। তাতে আপাত ভাবে সেতুর ক্ষতি না হলেও ভিতরে সমস্যা আছে কি না, তা-ও খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও ওই সুড়ঙ্গ কাটার সময়ে সেতুতে যান চলাচল বন্ধ ছিল।

রাইটস্-এর ইঞ্জিনিয়ারদের প্রশ্ন করা হয়, বঙ্কিম সেতু কার্যত গ্যারাজে পরিণত হয়েছে। দিনরাত সেতুর একটা দিকে গাড়ি রাখার ফলে কি সেটির ক্ষতি হচ্ছে? সেতু পরীক্ষাকারী দলের প্রধান রাজীববাবু বলেন, ‘‘সেতুর কাঠামো ও কংক্রিট যথেষ্ট মজবুত রয়েছে। যানবাহন থাকলেও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে সেতুটির কিছু মেরামতির প্রয়োজন। রেলিং ও ফুটপাথের বহু অংশ ভাঙা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement