পরিদর্শন: পথের ধারের দোকানে খাবার যাচাই করছেন হাওড়া পুরসভার আধিকারিকেরা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
কোথাও নর্দমার ধারেই রাখা হয়েছে তেল ভর্তি রান্নার কড়াই। কোথাও খোলা রাস্তায় বসেই মাখা হচ্ছে ময়দা। কোথাও আবার খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে শিল্পে ব্যবহৃত রং, অনামী সংস্থার তৈরি ভোজ্য তেল থেকে ঘি ও বিভিন্ন ধরনের সস।
সবই বিকোচ্ছে দেদার। কিন্তু ফুড লাইসেন্স বা ট্রেড লাইসেন্স নেই কারও কাছেই।
রাস্তার ধারে গজিয়ে ওঠা খাবারের দোকানগুলিতে অভিযান চালিয়ে এমনই অভিজ্ঞতা হল হাওড়া পুরসভার। মধ্য হাওড়া-সহ হাওড়া স্টেশন এলাকা ও বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হোটেল ও স্টলগুলির খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। হাওড়া পুরসভার কাছে এ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছে আগেই। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, সব জেনেও পুরসভা এত দিন কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি।
হাওড়া ও বালি নিয়ে হাওড়া পুরসভার যে ৬৬টি ওয়ার্ড রয়েছে, সেই সব ক’টি ওয়ার্ড ধরলে এই ধরনের খাবারের দোকানের সংখ্যা হাজারের কাছাকাছি। গত পাঁচ বছরে এমন দোকানের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের মেয়র পারিষদ ভাস্কর ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে পুরসভার একটি দল এমনই সব দোকানে হানা দিয়ে উদ্ধার করে প্রচুর পোড়া তেল, শিল্পে ব্যবহৃত রং ও নানা ধরনের সসের বোতল উদ্ধার করেন। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, মান যাচাইয়ের জন্য ওই সমস্ত খাবার ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে।
মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) বলেন, ‘‘যে সব খাবারের দোকানে আমরা হানা দিয়েছি, এক জন বাদে তাদের কেউই ‘ফুড সেফটি স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অব ইন্ডিয়া’ (এফএসএসএআই)-র অনুমোদিত উপকরণ ব্যবহার করে না। তাই আমরা নির্দেশ দিয়ে এসেছি, যাঁরা এফএসএসএআই-এর অনুমোদনহীন জিনিস ব্যবহার করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) জানান, হাওড়া শহর জুড়ে রাস্তার ধারে যাঁদের খাবারের দোকান আছে, তাঁদের প্রত্যেককে মঙ্গলবার পুরসভায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। কী কী নিয়ম মেনে ফুড স্টল বা দোকান চালাতে হবে, তা বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়ে বলা হবে।
মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) বলেন, ‘‘দোকানের ঝাঁপ ফেলে দিয়ে কারও আয়ের উৎস বন্ধ করতে চাই না আমরা। কিন্তু এ জন্য সমস্ত নিয়ম মেনে স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে খাবার বিক্রি করতে হবে।’’