ডেঙ্গি রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য পেতে এ বার বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলির ওপর নজরদারি চালাবে হাওড়া পুরসভা। এর পাশাপাশি মশাবাহিত রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই সব বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলি জাতীয় গাইডলাইন মেনে চলছে কি না, তাও দেখবে পুরসভা। এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করতে মে মাসেই বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলির মালিকদের নিয়ে বৈঠকে বসছে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর।
হাওড়া পুরসভার বক্তব্য, মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ে মূলত মে মাসের পর থেকে। চলে প্রায় অক্টোবর পর্যন্ত। এই দীর্ঘ সময় ধরে সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি ছাড়া বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিতে জ্বর নিয়ে প্রচুর সংখ্যক রোগী ভর্তি হন। গত বছরের হিসাব থেকে দেখা যাচ্ছে, শুধু পুরসভা এলাকাতেই প্রায় দু’হাজার বাসিন্দা মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাই এই রোগের প্রকোপ বাড়ার আগেই জন সচেতনতা বাড়াবার পাশাপাশি বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে সচেতনতা শিবির করার পরিকল্পনা নিয়েছে পুরসভা।
হাওড়া পুরসভার বক্তব্য, গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যাচ্ছে জ্বরে অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে ভর্তি থাকা রোগীদের এনএস ওয়ান পজিটিভ পরীক্ষা এবং পাঁচ দিন পরে রক্তের আইজিএম পরীক্ষা করা হচ্ছে না। ফলে বিল গুনতে হচ্ছে রোগীদের। রোগও সারছে না। পুরসভার অভিযোগ, অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, ঠিক কত জন ডেঙ্গি রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে বা কত জন আক্রান্ত হয়েছেন সেই তথ্য বারবার বলার পরেও পুরসভাকে দেওয়া হচ্ছে না। এই সব সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলির কতৃর্পক্ষকে ডেকে পাঠানো হচ্ছে।
হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের ভারপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকে ডাকা হয়েছে মশাবাহিত রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশনের যে গাইডলাইন রয়েছে তা নিয়ে আলোচনার জন্য। তাঁদের হাতে এ সংক্রান্ত একটি বইও পুরসভার পক্ষ থেকে তুলে দেওয়া হবে।’’
ভাস্করবাবু জানান, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের জন্য এর পাশাপাশি ডেকরেটর, বিভিন্ন আবাসনের দায়িত্বে থাকা কমিটিকে বৈঠকে ডাকা হবে। ডেকরেটরদের জানানো হবে, বাঁশের ডগায় যে ফাঁপা অংশ আছে সেখানে জমা জলে ডেঙ্গির মশা ডিম পাড়ে। তাই বাঁশের মাথা এখন থেকে ঢেকে রাখতে হবে।